নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ভাঙাচোরা ব্রিজে ভোগান্তিতে দুই ইউনিয়নের মানুষ

বোরহান উদ্দিন সবুজ বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের আটবাড়িয়া ব্রিজটির বেহাল দশা। অনেক আগ থেকেই বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন ব্রিজটির ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সিএনজি, অটোরিকশা’সহ ছোট যানবাহনগুলো।
দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা ব্রিজটি দুইটি ইউনিয়নের কয়েক হাাজর মানুষের দূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িছে। ব্রিজ পারাপারে প্রায়স ঘটছে দূর্ঘটনা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বলছেন ব্রিজটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে, বরাদ্দ ফেলে এটি পুনঃনির্মাণে কাজ শুরু করা হবে।
সরজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৬সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে নোয়াখালী খালের ওপর নির্মাণ করা হয় আটবাড়িয়া ব্রিজটি। মূলত একলাশপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নের লোকজনের যাতায়তের সুবিধার জন্য এটি নির্মাণ করা হয়। যা দিয়ে দুটি ইউনিয়নে কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন জেলা শহর মাইজদী ও বানিজ্যক কেন্দ্র চৌমুহনীতে যাতায়ত করে। একটা সময় ব্রিজটির ওপর দিয়ে ছোট-বড় সকল ধরনের গাড়ি চলাচল করতো। কিন্তু গত ৩/৪ বছর ধরে ব্রিজটির রেলিং, ফলেস্তরা’সহ বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাওয়া সেটি যান চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ে। সবশেষ গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরের বন্যা ও দীর্ঘসময় ধরে জলাবদ্ধতার কারনে ব্রিজটির অবস্থা আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন কয়েকদিন পর পর সড়ক থেকে ব্রিজে সংযোগের দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে তৈরি হয়েছে বড় গর্তের। কিছুদিন গেলে স্থানীয় লোকজন নিজ উদ্দেগ্যে কিছু মাটি দিয়ে মোটামুটি চলাচলের উপযোগি করে নেন। এরপরও প্রতিদিন ব্রিজের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সিএনজি, অটোরিকশা, রিকশা ও সাইকেল’সহ ছোট যানবাহন। যার ফলে প্রতিদিনই ঘটছে দূর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন বলেন, জেলা শহর বা চৌমুহনী যাওয়ার মতো কাছাকাছি বিকল্প কোন সড়ক বা ব্রিজের ব্যবস্থা না থাকায় এ ব্রিজটি দুই ইউনিয়নের লোকজনের একমাত্র যাতায়তের মাধ্যম। ব্রিজের দুই পাশে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ’সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থাকার কারণে কোমলমতি শিশু, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় লোকজনকে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজের ওপর দিয়ে প্রতিদিন যাতায়ত করতে হয়।
আরও পড়ুনশরীফপুর ইউনিয়নের মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ব্রিজের পূর্বপাশে বড় ধরনের কোনো সরকারি স্থাপনা, অফিস বা হাসপাতাল নেই। তাই বাধ্য হয়ে পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে আমাদের শহর মূখি হতে হয়। জেলার শহরের বড়-বড় হাসপাতাল মাইজদী ও চৌমুহনীতে হওয়ায় আমাদের সেখানে যাওয়া লাগে। কিন্তু নোয়াখালী খালের ওপর ব্রিজটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় এ্যাম্বুলেন্স বা রোগি পরিবহনকারী কোন বড় গাড়ি পূর্ব পাশের কোনো গ্রামে আসতে পারে না। তাই অসুস্থ রোগিদের প্রথমে পূর্ব পাশ থেকে একটি গাড়ি করে ব্রিজ পর্যন্ত নিয়ে পশ্চিম পাশ থেকে অন্য গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিতে হয়। যার ফলে অনেক সময় রোগিদের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়ে যায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে আগের ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ করার দাবি পূর্ব একলাশপুর, শরীফপুর, সোনাপুর, খানপুর গ্রাম’সহ একলাশপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের। অন্যথায় যে কোন মুহুর্ত্বে ব্রিজটি ভেঙে পড়লে আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়বে এসব গ্রামের মানুষজন।
স্থানীয় সরকার প্রৌকশল অধিদপ্তর নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মাহফুজুল হোসেন বলেন, ব্রিজটি ইতোমধ্যে আমাদের একটি টিম পরিদর্শন করেছে। এটি ঝুঁকিপূর্ণ স্বীকার করে তিনি বলেন, ব্রিজটির কাজ করার জন্য একটি প্রকল্প ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন ফেলে এটির কাজ শুরু করা হবে।
মন্তব্য করুন