শহীদ জিয়া গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিজস্ব জাতীয়তাবাদ সৃষ্টির রূপকার ছিলেন -অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সর্বকালের একজন সর্বশ্রেষ্ঠ দেশ প্রেমিক। জিয়াউর রহমান সর্বশ্রেষ্ঠ সংগঠক। জিয়াউর রহমান একজন দূরদর্শী সম্পন্ন রাজনীতিবীদ ছিলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতির জিয়াউর রহমান সর্বপ্রথম একদলীয় শাসন ব্যবস্থা সংস্কার করে বহু দলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন।
বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ রাষ্ট্রপতির জিয়াউর রহমান বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। শহীদ জিয়া এ দেশে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, সংবাদপত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা স্বনির্ভরতা, উন্নয়ন ও নিজস্ব জাতীয়তাবাদ সৃষ্টির অনন্য রূপকার ছিলেন। যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আর সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন, সেই গণতন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন যাত্রা আজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পদে পদে। অবিলম্বে আমরা বাংলাদেশকে গণতন্ত্রে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত দেখতে পাবো।
তিনি আজ শনিবার (৩১ মে) বিকেলে শহীদ টিটু মিলনায়তনে বগুড়া জেলা বিএনপি আয়োজিত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে এ কথাগুলো বলেন। তিনি আরও বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যেমন বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ঠিক একইভাবে পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের গতিকে প্রতিরোধ করা হয়েছিল।
দেশে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার ও কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে বিএনপি ও এর বাহিরেও বহু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এমনকি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহিদ হয়েছেন। হাজারো মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন অনেকেই। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রতিটি রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে জনগণকে সম্পৃক্ত করেছেন উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের মানুষ, নতুন প্রজন্ম ভবিষ্যৎ দেখতে চান।
তাদের স্বপ্ন দেখাতে হবে, তা বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে, জনগণের আস্থা অর্জন করত হবে। ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান খালকাটা কর্মসূচি, সবুজ বিপ্লব, শিল্প উন্নয়ন এবং যুগোপযোগী ও আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে স্বনির্ভর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা রাখেন। নারী সমাজের উন্নয়ন ও শিশুদের বিকাশে তার আগ্রহ জাতিকে নতুন দিক নির্দেশনা দেয়। তার সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও দেশপ্রেম ছিল অতুলনীয়। শহীদ জিয়া মানেই জাতীয়তাবাদী, জিয়া মানেই দেশপ্রেমিক, জিয়া মানেই গণতন্ত্র। তার প্রত্যেকটা পদচারণার মধ্যে উদ্দেশ্য থাকতো জাতির জন্য।
তিনি বলেন, জাতি জিয়ার আদর্শকে বুঝতে পারলে আমাদের মধ্যে ভয় থাকবে না। তিনি আরও বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে বন্দিদশা থেকে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে এনে দায়িত্ব দিলেন দেশ পরিচালনার জন্য। জাতি যখন হতাশাগ্রস্ত, সেই সময় মেজর জিয়া আশা জাগিয়েছিল, ভরসা দিয়েছিল, অস্ত্র হাতে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছিল। ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষকে চলাকালে কুড়িগ্রামে বাসন্তী তার লজ্জা নিবারণের জন্য মাছ ধরার জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছিল, সেই ছবি তুলেছিলেন রশিদ তালুকদার।
আরও পড়ুনসেই রশিদ তালুকদারকে আওয়ামী লীগ পরবর্তী সময়ে জীবিত থাকতে দেয়নি। এই দেশে যত অনাচার, অনিয়ম, চোরাকারবারি, রিলিফ চুরি, ব্যাংক ডাকাতি, কম্বল চুরি সবগুলো সাথে একটি নাম জড়িত সেটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজ বিএনপিকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বা ষড়যন্ত্র করে থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা মহান আল্লাহ ছাড়া কারো নেই। যারা ষড়যন্ত্র করছেন, হুমকি দিচ্ছেন, মনে রাখবেন বিএনপি জনগণের দল।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের এদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন শহীদ জিয়া। তিনি এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছেন। মাত্র কয়েক বছরে এদেশের মানুষকে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। খাল কাটার মধ্যে সারাদেশ ঘুরেছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন। ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আজ যারা রেমিট্যান্স নিয়ে কথা বলেন তারা ভুলে গেছে, শহীদ জিয়াউর রহমানের হাত ধরে এদেশের মানুষ রেমিট্যান্স যোদ্ধা হওয়া শুরু করেছিল।
বগুড়া জেলা বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি মোশারফ হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আলোচক বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র এড. একেএম মাহবুবর রহমান, বিএনপি চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং সাবেক এমপি মো. হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহা. হাসানাত আলী।
এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলাম, আলী আজগর তালুকদার হেনা, জয়নাল আবেদীন চাঁন, মাহবুবর রহমান হারেজ, জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল বারী বেলাল, জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি এমআর ইসলাম স্বাধীন, মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদ উন নবী সালাম, কেএম খায়রুল বাশার, জাহিদুল ইসলাম হেলাল, বিএনপি নেতা তৌহিদুল আলম মামুন, শেখ তাহাউদ্দিন নাহিন, মনিরুজ্জামান মনি, এনামুল হক সুমন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমা আক্তার, অধ্যক্ষ ইউসুফ আলী, জেলা যুবদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শুভ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান সরকার, সাধারণ সম্পাদক এমআর হাসান পলাশ, শহর যুবদলের সভাপতি আহসান হাবিবব মমি, সাধারণ সম্পাদক আদিল সাহরিয়ার গোর্কি, ছাত্রদল নেতা এসএম রাঙ্গা, আতিকুর রহমান রিমন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন