সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে হুরাসাগরের বুকে নানা জাতের ফসলের চাষাবাদ

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের বুক চিরে উত্তর-দক্ষিণ বয়ে গেছে হুরাসাগর নদী। একসময়ের প্রমত্তা এই নদীটি কালের বিবর্তনে এখন হারিয়েছে যৌবন। অথচ অতিতে এই নদী দিয়ে সরাসরি জাহাজ যোগে পোরজনা বাজার সংলগ্ন আশ্রম থেকে ভারতের কলকাতায় চলাচল করতো মানুষ।
একসময়ের ভরা যৌবনা নদীটি ঐতিহ্য হারিয়ে মরা খালে পরিণত হওয়ায় ডিঙি নৌকা চলাচলের উপযোগীও নেই আর। মরা রক্তের নালির মত সরু এই নদীর তলায় পানি না থাকায় কৃষকেরা আবাদ করছে বিভিন্ন ফসল। বর্তমানে হুরাসাগর নদীর মতো শাহজাদপুরের সোনাই, চিকনাই, হুরাসাগরসহ নানা নদ-নদীর বুকে মাইলের পর মাইল জেগে উঠেছে বিস্তীর্ণ বালুর চর। ওইসব চরে চলছে নানা ফসলের চাষাবাদ।
সরেজমিনে হুরাসাগর নদীতে গিয়ে দেখা যায়, মাথার সিঁথির মত সরু এঁকেবেঁকে বয়ে চলা হুরাসগরের যতদূর চোখ যায় কোথাও পানি নেই। নদীর দিকে তাকালে এখন বৃদ্ধ মানুষের রক্ত নালির মতো মনে হয়। এক সময় নদীটি ছিল উত্তাল। কলকল করে বয়ে চলতো পানি। দূকুল ছাপিয়ে উত্তাল হুরাসাগর ধুয়ে দিত এ অঞ্চলের প্রাণিকূলকে।
নদীর বুকে রাজহাঁসের মতো ভাসতো বড় বড় নৌকা, ছোট বড় জাহাজ। সেই যৌবনা নদী এখন খাঁ খাঁ মরু ভূমি। প্রাণহীন নদীর ওপর দিয়ে এঁকে বেঁকে চলে গেছে পায়ে হেটে চলার রাস্তা। মাটির গভীর থেকে পানি তুলে নদীর ওপর চাষ করা হচ্ছে ধান।
আরও পড়ুননদীর এমন করুণ দুর্দশার প্রভাব পড়েছে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোর কৃষকসহ জেলে পরিবারগুলোর জীবনেও। এই হুরাসাগর নদীই ছিল নদী তীরবর্তী জেলে পরিবারগুলোর জীবিকা নির্বাহের অন্যতম উপায়। কিন্তু নাব্যতা সংকটসহ নানাবিধ কারণে নদীর এমন বেহাল দশায় জেলেরাও কর্মহীন হয়ে পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে।
কেউ কেউ আবার জীবিকার তাগিদে হয়েছেন এলাকা ছাড়া। তাই অবিলম্বে হুরাসাগর নদী খনন করে নদীর পানি প্রবাহ ফিরিয়ে দেয়া, স্থানীয় জেলেদের কর্মসংস্থান ও এলাকার কৃষকদের চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য এলাকাবাসী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
মন্তব্য করুন