তপ্ত রোদের দখলে প্রকৃতি ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই

স্টাফ রিপোর্টার : আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টির দেখা নাই। বৈশাখের শুরু থেকেই দিন দিন বাড়ছে সূর্যের তাপ বর্ষণের তীব্রতা। এক সেকেন্ডও রোদে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের। প্রকৃতির এই উত্তাপে ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। কৃষিতে দেখা দিয়েছে সেচ সংকট। শুকিয়ে যাচ্ছে বোরোর ক্ষেত। আজ শনিবার (২৬ এপ্রিল) বগুড়ার তাপমাত্রার পারদ উঠেছে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে।
বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকার জন্য মানুষ দর দর করে ঘামছেন এবং বিশেষ করে সকালে বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। এই অবস্থা চলবে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আগাম পূর্বাভাসে বলছে আবহাওয়া অফিস। অবশ্য এরই মাঝে হালকা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির আভাস থাকলেও তা স্বস্তি আনবে না বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়াবিদ ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গতবছর দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এবারও স্বাভাবিক বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছেন না তারা। বিচ্ছিন্নভাবে কিছুটা বৃষ্টি হতে পারে। তবে টানা বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
গরমে পুড়ছে নগর-জনপদ। এরই মধ্যে রাজশাহী বিভাগ এবং দিনাজপুর, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে মেঘ করছে আকাশে, তবু গরমে টেকা দায়। হাঁসফাঁস করছে শহরবাসী। ছটফট করছে পশুপাখিরা।
ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। বৈশাখের রুক্ষ রুদ্ররূপ না দেখা দিলেও একটু-আধটু ঝিরিঝিরি বৃষ্টির দেখা মিললেও পরক্ষণেই রোদ উঠছে প্রচন্ড তাপ নিয়ে। বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকায় আঁচটা খুব বেশি। এর ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কর্মজীবী মানুষের জীবন। তীব্র দাবদাহে সবচেয়ে কষ্টে আছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা। তারা বাইরে বের হলেই অতিরিক্ত ঘামে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।
আরও পড়ুনপ্রচন্ড রোদ ও বৃষ্টিহীনতায় বোরো মৌসুমে সবচেয়ে বেশি বিপাকে রয়েছে কৃষক, মাছচাষী ও মৌসুমী ফল চাষীরা। কাঙ্খিত বৃষ্টি নেই। ধানের জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগ। তেলের দাম বেশি হওয়ায় সেচ খরচ বাড়ছে। এতে বাড়ছে উৎপাদন খরচও। পুকুরগুলোতে সেচ দিয়ে পানি ধরে রাখতে হচ্ছে। মৌসুমী ফল ঝরে পড়ার জন্য কৃষি অফিসের পরামর্শে গাছে পানি ছিটাতে হচ্ছে।
এদিকে সকাল থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত রোদের প্রচন্ড তাপে খেটে খাওয়া মানুষের কর্মঘন্টা কমে গেছে। একবার একটা ভাড়া নিয়ে শহর ঘুরে এসে কোন গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হচ্ছে এবং রাস্তার পাশের দোকান থেকে কম টাকায় শীতল পানীয় কিনে খেতে হচ্ছে বলে জানান ব্যাটারি চালিত অটো রিকশাচালক ষাটোর্ধ শফিকুল।
বগুড়া আবহাওয়া অফিস জানায়, এমাসে তাপদাহ খুব বেশি কমবে না। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত প্রকৃতিতে এরকমই আবহাওয়া বিরাজ করবে। মাঝেমধ্যে তাপমাত্রা কম থাকতে পারে, কিন্তু গরমের অনুভূতি কম থাকবে না। আজ শনিবার (২৬ এপ্রিল) বগুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ডিগ্রী সেলসিয়াস। গত শুক্রবার বগুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
মন্তব্য করুন