পাবনার সুজানগরে সনাতন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ, পচনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

সুজানগর (পাবনা) প্রতিনিধি : বাংলাদেশের মধ্যে পেঁয়াজ আবাদে পাবনার সুজানগর উপজেলা প্রথম। সেকারণে এ উপজেলা দেশের পেঁয়াজ ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত। অথচ উপজেলার অধিকাংশ কৃষক বছরের পর বছর টিনের ঘর বা সেমিপাকা ঘরে বাঁশের মাচা তৈরি করে সনাতন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে আসছেন। এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করায় ব্যাপক পচন ধরে। এতে পেঁয়াজ চাষিদের প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বড় পেঁয়াজ চাষি মো. কামরুজ্জামান বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে বাঁশের মাচায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ করলে প্রয়োজনীয় আলো-বাতাসের স্বল্পতা দেখা দেয়। এতে একদিকে পেঁয়াজে ব্যাপক পচন ধরে, অন্যদিকে শুকিয়ে ওজন একদম কমে যায়।
তাছাড়া বাঁশের মাচা তৈরি করতে অনেক খরচ হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা সনাতন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণ করা যায় না। আর সেকারণে পেঁয়াজ চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাওয়ার আগেই বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়। ফলে বেশিরভাগ সময় পেঁয়াজ বিক্রি করে কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠে না।
আরও পড়ুনউপজেলার মানিকহাট গ্রামের পেঁয়াজ চাষী ওমর আলী প্রামাণিক বলেন সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত এয়ার ফ্লো মেশিনের মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারলে কৃষক বেশ লাভবান হতো। এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করলে পেঁয়াজে পচন ধরে না। তাছাড়া ওজনও তেমন কমে না। পাশাপাশি ওই পদ্ধতিতে একটি সেমিপাকা ঘরের মেঝেতে মাত্র দশ ফুট দৈর্ঘ্য এবং দশ ফুট প্রস্থে’র একটি বাঁশের মাচা ও ইটের দেয়াল তৈরি করে তার মাঝে প্রায় তিনশ’ মণ পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম বলেন, এ উপজেলার কৃষকেরা যাতে তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ আধুনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে দীর্ঘমেয়াদে ঘরে রাখতে পারে সেজন্য কৃষি বিভাগ প্রণোদনা কর্মসূচি ও প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আশা করি ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কৃষক দীর্ঘমেয়াদে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে ন্যায্য মূল্য নিশিচত করতে পারবে। সেই সাথে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতাও হ্রাস পাবে।
মন্তব্য করুন