ম্যাটস শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, কয়েকজন আহত

চার দফা দাবি আদায়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয় অভিমুখে যাওয়া অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের থামাতে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। লাঠিচার্জে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আজ রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে শিক্ষা ভবনের সামনে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শিক্ষার্থীরা পুলিশি বাধা ও ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ের সামনে যেতে চাইলে শিক্ষা ভবনের সামনে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। এরপর লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দও শোনা যায়। পুলিশের ধাওয়ায় ফের শাহবাগ ফিরে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছেন আন্দোলনরত ম্যাটস শিক্ষাথীরা।
এদিকে, বেলা ৪টার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক চলছে।প্রতিনিধিদলে রয়েছেন—সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের রামিম, মুজাহিদুল ইসলাম, হাসিবুল হাসান শান্ত, শামীম, আহমদ উল্লাহ মানসুর।
এর আগে দুপুর ২টার দিকে শাহবাগে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তুহিন ফারাবী। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিনি বলেন, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগের বিষয়ে কাল-পরশুর মধ্যে সার্কুলার হবে। আপনাদের দাবির বিষয়ে কথা বলতে প্রতিনিধিদলকে আমি নিয়ে যেতে এসেছি। এখন আপনারা সিদ্ধান্ত নেন, আপনারা যাবেন, নাকি এখানে থাকবেন।
এরপর বিকেল ৩টায় শাহবাগ থেকে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলটিকে সচিবালয়ে নিয়ে যান তিনি। এর আগে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে চার দফা দাবি আদায়ে সরকারকে এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন ম্যাটস শিক্ষার্থীরা। তখন এই এক ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে লং মার্চ করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
চার দফা দাবি আদায়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বাস্তবায়ন না করায় রোববার সকাল থেকে লং মার্চ কর্মসূচি পালন করছেন ম্যাটস শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১১টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সড়কে বসে পড়েন তারা।
আরও পড়ুনতাদের চার দাবি হলো-
১। ০১ যুগের (১২ বছরের) অধিক সময় ধরে নানান অজুহাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর শূন্য পদে বন্ধকৃত নিয়োগ অভিযুক্ত সচল করতে হবে এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদ সৃষ্টি করতে হবে। (কারণ, ওখানে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের এখন পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়া হয়নি কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ঔষধের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয়, যা জনগণের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা)।
২। প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন, কোর্সের নাম পরিবর্তন (১৯৮৫ সালের সিদ্ধান্ত) সহ ২০২১ এর কোর্স কারিকুলামের ত্রুটি ও অসংগতি সমাধান করে নতুন ইন্টার্ন লগবুক প্রণয়ন করতে হবে।
৩। উচ্চশিক্ষা বঞ্চিত, বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা প্রদান করতে হবে।
৪। প্রস্তাবিত এলাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড খসড়া আইনের নাম পরিবর্তনসহ প্রস্তাবিত সকল ধারায় সংশোধনীসহ বাস্তবায়ন করতে হবে।
মন্তব্য করুন