সকল ব্যানার অপসারণ
বগুড়ায় ভেঙ্গে ফেলা জাসদ অফিসসহ সকল জায়গার মালিক সরকার

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় ভেঙ্গে ফেলা জেলা আওয়ামীলীগ ও জাসদ অফিসের জায়গা নিজেদের বলে দাবি করার কিছুক্ষণ পর ওই জায়গায় মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দেয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা। আবার সন্ধ্যার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারি কমিশনার (ভূমি) পলাশ চন্দ্র সরকার ওই স্থান সরকারি সম্পত্তি বলে উল্লেখ করে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্র জনতা শহরের সাতমাথাস্থ জাসদ ও আওয়ামীলীগের দলীয় অফিস, টাইন ক্লাবসহ বিভিন্ন স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়। এরপর দিন গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কতিপয় ব্যাক্তি জাসদের কার্যালয় স্থলে নিজেদের জায়গা আছে বলে দাবি করে।
এরপর আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তারা ধ্বংসস্তুপের উপর জমির তফশীল উল্লেখ করে প্যানা টানিয়ে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ভবনটির ধ্বংসাবশেষ’র শীর্ষে ‘জুলাই ২০২৪ স্মৃতি করণ মসজিদের জন্য নির্ধারিত স্থান লেখা ব্যানার টানান।
সেই সাথে ওই জায়গাটি কতিপয় ব্যক্তি জায়গাটি তাদের দাবি করে টানানো ব্যানারটি অপসারণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। এ সময় ডা. আব্দুল্লাহ সানি নামে একজন সেখানে মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে বলেন, জুলাই বিপ্লবের শহীদ আবু সাঈদের নামে ‘শহীদ আবু সাঈদ জামে মসজিদ' এখানে স্থাপন করা হবে।
আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কয়েকজন ব্যক্তি ভেঙ্গে ফেলা জাসদ কার্যালয়ের জায়গাটিকে নিজেদের দাবি করে ভেঙ্গে দেয়া ভবনের ওপরে একটি ব্যানার টানানো হয়। ওই ব্যানারটিতে লেখা ছিল ‘এই সম্পত্তি ১৯৫২ সালে ক্রয় সূত্রে মালিক কোরবান আলী, আব্দুর রহমান, রুস্তম আলী, বাবু কালি গোপাল। তাদের পক্ষে মিজানুর রহমান এবং মোখলেছুর রহমান দাবি করেন, জাসদ অফিসের সম্পত্তি তার দাদার কেনা সম্পত্তি। তার দাদা ১৯৫২ সালে সেটি কিনেছিলেন।
তবে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জায়গাটি বেহাত হয় এবং পরবর্তীতে জাসদের দলীয় কার্যালয় হিসেবে সেটি ব্যবহার করা হয়। তারা বলেন, রাজনৈতিক দলের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের কারণে এতদিন তারা জায়গাটির দখল পাচ্ছিলেন না। এখন সেটি ভেঙ্গে ফেলায় দখল নিতে এসেছেন।
আরও পড়ুনঅবশ্য বগুড়া জেলা জাসদ (ইনু) সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের জানান, ওই সম্পত্তি ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন ব্যক্তির নামে ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার সময় তারা ভারতে চলে যান। পরে সরকার জায়গাটির কর্তৃত্ব গ্রহণ করে। তবে ১৯৭২ সাল থেকে আমরা সেখানে আছি এবং লিজের জন্য আবেদন করি। আবেদন করার পর মালিকানা দাবি করে বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপ মামলা করলে আবেদনটি ঝুলিয়ে থাকে। এক বছর আগে ওই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। সে কারণে লিজ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। তবে আবেদনটি এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ওই জায়গাটিতে মসজিদ বানানোর দাবির পর ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মুসল্লিরা পাশেই মুক্তমঞ্চে মাগরিব এর নামাজ আদায় করেন। এরপর পরই জেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারি কমিশনার (ভূমি) পলাশ চন্দ্র সরকার ধ্বংসস্তুপের সামনে এসে আগে লাগানো সকল ব্যানার খুলে ফেলেন। এ সময় তিন বলেন, এই জায়গা সরকারের। কোন ব্যক্তি দাবি করলেই তার হবে না।
আর মসজিদের ব্যাপারে তিনি বলেন, মসজিদ নির্মাণ করার ব্যাপারটি উচ্চ মহলের সিদ্ধান্ত। সরকারিভাবে টানানো প্যানায় লেখা রয়েছে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গেজেটভূক্ত পরিত্যাক্ত ও অর্পিত সম্পত্তি’ মৌজা : সূত্রাপুর, দাগ নং ১৬১৪, ১৬১৫, ১৫৫৩। জেলা প্রশাসক, বগুড়া।
মন্তব্য করুন