পাঁচ চিকিৎসক দিয়ে চলছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে পাঁচজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। চিকিৎসক স্বল্পতাসহ নানান সংকটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা। এখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক নেই, নেই রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ফলে উপজেলার প্রায় পৌনে ৩ লাখ মানুষের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
আজ বুধবার (১১ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩২ জন চিকিৎসকের স্থলে রয়েছেন মাত্র ৭ জন। এই ৭ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১ জন কোরিয়া ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালে সংযুক্ত এবং ১ জন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাসহ মোট ৫ জন চিকিৎসক হাসপাতালে আগত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। বাধ্য হয়েই তাদের একাধিক শিফটে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
অন্যদিকে চিকিৎসক সংকট থাকায় রোগী দেখার নিয়ম না থাকলেও বাধ্য হয়েই বহির্বিভাগে রোগী দেখে ওষুধ লিখে দিচ্ছেন হাসপাতালে কর্মরত ২ জন ফার্মাসিস্ট। প্রতিদিন তারা বিভিন্ন শিফটে দায়িত্ব পালন করছেন। এবিষয়ে ফার্মাসিস্ট রিয়া খাতুন বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে ইউএইচএফপি স্যারসহ মোট পাঁচ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
তারা ইনডোরে রোগী দেখেন। ডাক্তার সংকটের কারণে আমাদের ওয়ার্ডার করে এখানে আনা হয়েছে। দুইজন মেডিকেল এসিস্ট্যান্টসহ আমরা শিফট করে রোগীদের সেবা দিচ্ছি। হাসপাতালে কনসালটেন্ট না থাকায় শিশু রোগীদের সেবা দিচ্ছেন সহকারী ডেন্টাল সার্জন।
এবিষয়ে সহকারী ডেন্টাল সার্জন মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আগে ওপরে বসতাম। একমাস থেকে কোন কনসালটেন্ট নেই। তাই আমি এখন রোগী দেখতেছি। চিকিৎসক সংকট থাকায় বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগী এবং তাদের স্বজনদের মাঝে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে।
আরও পড়ুনএদিকে হাসপাতালে ওষুধ সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত স্টোর কিপার নিয়ামত উল্লাহ বলেন, শিশুদের ওষুধের সংকট রয়েছে। আমরা ওষুধের যে চাহিদা দেই সেই অনুপাতে সরবরাহ পাই না। বগুড়ার সরকারি ওষুধ কারখানায় ৭ লাখ প্যারাসিটামল ট্যাবলেটের চাহিদা দিয়েছিলাম সেখানে আমরা পেয়েছি মাত্র ১ লাখ। এছাড়া আমরা যদি ৫ হাজার সিরাপের চাহিদা দেই তাহলে আমরা পাই ৫শ’। ঐ ৫শ’ সিরাপ এক মাসেই শেষ হয়ে যায়।
চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন ধর বলেন, আমাদের এখানে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে চিকিৎসক সংকট নিরসনে কাজ করছেন।
আমরা স্বল্প জনবল দিয়ে যথা সম্ভব রোগীদের সেবা দিচ্ছি। মাঝে মাঝেই রোগী এবং রোগীর স্বজনদের সাথে কথা হয় তারা আমাদের সেবায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে।
মন্তব্য করুন