ভিডিও বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

বগুড়ার ধুনটে নিজের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও নিয়েছেন আশ্রয়ণের ঘর থাকেন না, ঝুলছে তালা

ধুনটে নিজের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও নিয়েছেন আশ্রয়ণের ঘর থাকেন না, ঝুলছে তালা, ছবি: দৈনিক করতোয়া

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : রেহেনা-খাজুর আলী দম্পতির নিজের জমি ও টিনশেড ঘরবাড়ি আছে। সেই বাড়িতেই থাকেন। অথচ নিজেদের ভূমিহীন দেখিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে নিয়েছেন একটি ঘর। সেই ঘরে থাকেন না,তালা ঝুলছে। একই দৃশ্য মাহমুদ-নুরনাহার এবং কাকুলী-আমিনুর দম্পতির নামে বরাদ্দ নেওয়া ঘরে। এটি বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলবাড়ি আশ্রায়ন প্রকল্প এলাকার চিত্র।

এই আশ্রয়ন প্রকল্পের ১৭টি ঘরের মধ্যে ৭টি ঘরে ঝুলছে তালা। আর যারা থাকছেন, তাদের অনেকের নামে ঘরগুলো বরাদ্দ নেই। অন্যের কাছ থেকে কিনে নিয়ে সেখানেই তারা বসবাস করছেন। শুধু শিমুলবাড়ি নয়,একই চিত্র উপজেলার সবগুলো আশ্রায়ন প্রকল্পেরই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ভূমিহীন-গৃহহীন পারিবারের জন্য এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩৯৯টি ঘর নির্মান করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। প্রতিটি ঘরে রয়েছে দুটি কক্ষ,একটি রান্নাঘর ও একটি শৌচাগার। রয়েছে বিদ্যুৎ আর সুপেয় পানির ব্যবস্থা। নির্মাণের কয়েক মাসের মধ্যে দুই শতক জমির দলিল সহ ঘরগুলো বাসিন্দাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

সরেজমিন কয়েকটি আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়,অধিকাংশ ঘরেই তালা ঝুলছে। বসবাস না করায় ঝোাঁপঝাড়ে ঘিরে ধরেছে ফাঁকা ঘরগুলো। আশপাশে জমে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। ঘরে রাখা হয়েছে খড়কুটো ও লাকড়ি। স্থানীয়রা জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর প্রকৃত ভূমিহীন-ঘরহীন ব্যক্তিরা বরাদ্দ পাননি।

সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করেই যাদের নিজস্ব বাড়ি ও জমিজমা রয়েছে,তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেয়ে তারা আর ঘরে থাকছেন না। অনেকে আবার ঘর বিক্রি করে অন্যত্র বসবাস করছেন। প্রকল্পের একটি ঘরের পাশে মাটির চুলায় রান্না করছেন গৃহবধূ আর্জিনা খাতুন। তিনি বলেন, আসল গরিবরা তো জমিঘর পাই নাই। অনেকের জমি ও ঘরবাড়ি আছে।

আরও পড়ুন

তারাও এখানে ঘর পাইছে। তারাই ঘরের মধ্যে থাকে না। ঘরগুলো খালি থাকায় রাতের বেলায় ভয় লাগে। সব ঘরে মানুষ থাকলে ভয় থাকত না। আরেক বাসিন্দা নুরজাহান বেগম বলেন, যাদের ঘরবাড়ি আছে, তারাও ঘর পেয়েছেন। তাই এখানে তারা থাকেন না। কখনো ঘরগুলো দেখতেও আসেন না তারা। কয়েকজন ঘরের মধ্যে ও বারান্দায় খড়কুটো ও লাকড়ি রেখেছেন।

একই এলাকার রঘুনাথপুর আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন,জহুরা খাতুন এই ঘরটি বরাদ্দ পেয়েছিলেন। তার কাছ থেকে ঘরটি কিনে নিয়েছেন। ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান বলেন, প্রকৃত ব্যক্তিদের নামে আশ্রায়নের ঘর বরাদ্দ দিয়ে এ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

কিন্ত জীবিকার তাগিদে কিংবা বিভিন্ন কারণে কেউ কেউ অন্যত্র চলে গেছেন। তাদের ঘরগুলো চিহ্নিত করে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের নামে নতুন করে বরাদ্দ দেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা সংকচের প্রস্তাব গৃহীত 

বিএফএ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস 

বগুড়ায় শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে ডিসি-এসপির সালাম গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ

শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে শাস্তি

যশোর সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত

সুনামগঞ্জ  দুই সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় শাড়ি-ফুচকা জব্দ