চলনবিলে বাউত উৎসবে শৌখিন মৎস্য শিকারিরা
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : প্রতি বছরের মতো এবারও পাবনার চলনবিল অধ্যুষিত ভাঙ্গুড়ার রুহুল বিলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মাছ ধরার ‘বাউত’ উৎসব। একে ঘিরে গত শনিবার ভোর থেকে মাছ ধরার নানা উপকরণ নিয়ে বিলপাড়ে জড়ো হন নানা বয়সী হাজারও মানুষ। এতে শৌখিন মাছ শিকারিদের মিলন মেলায় পরিণত হয় বিল এলাকা।
তবে নিষিদ্ধ কারেন্ট ও বাদাই জাল ব্যবহার করে নির্বিচারে পোনা মাছ নিধনের ফলে বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও তেমন মাছের দেখা মেলেনি। তাই অনেক মৎস্য শিকারিকেই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বলে জানান তারা।
এলাকাবাসী জানান, প্রতিবছর বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর নির্ধারিত দিনে ঘোষণা দিয়ে নির্দিষ্ট বিলে মাছ শিকার করা এ অঞ্চলের মানুষের একটি পুরোনো প্রথা। এদিন মাছ শিকারিরা পলো, বাদাই, খেওয়া জাল, ঠেলাজাল প্রভৃতি উপকরণ দিয়ে মাছ ধরে থাকেন। আর স্থানীয় ভাষায় এসব মাছ শিকারকে বলা হয় বাউত।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত শনিবার ভোরবেলা থেকেই উপজেলার রহুল বিলে শুরু হয় বাউত উৎসব। পাবনার ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, চাটমোহর উপজেলাসহ আশপাশের নাটোর, রাজশাহী ও সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে শত শত শৌখিন মাছ শিকারি বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা, বাস, ট্রাক, নছিমন-করিমনযোগে এসে জড়ো হয় বিলপাড়ে।
ভোরবেলা থেকে প্রায় দুপুর পর্যন্ত চলে মাছ শিকার। তারা রুই, কাতলা, শোল, বোয়াল, গজার, মিনার কার্প, পুঁটি, টাকি প্রভৃতি মাছ শিকার করেন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আজম (চঃদঃ) বলেন, বাউত উৎসব এই এলাকার একটি পুরোনো ঐতিহ্য। প্রতিবছর দূরদূরান্ত থেকে নানা বয়সী হাজার হাজার মানুষ এখানে একসাথে মাছ শিকারে নামেন। তবে এভাবে মাছ শিকার করায় দেশীয় প্রজাতি মাছের বংশ বিস্তারের জন্য ক্ষতিকর।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাপস পাল বলেন, চলনবিল অধ্যুষিত ভাঙ্গুড়া উপজেলার ঐতিহ্য রুহুল বিলের বাউত উৎসব। প্রতিবছর এ বিলে মাছ ধারার উৎসবে মেতে উঠে হাজারও মানুষ। দেশিও প্রজাতির মাছ টিকিয়ে রাখতে খাল-বিল খনন, মাছের পোনা অবমুক্তসহ মাছের অভায়শ্রমগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।
মন্তব্য করুন





_medium_1764588959.jpg)
_medium_1764588144.jpg)


