নওগাঁয় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর দুরবস্থা
নওগাঁ প্রতিনিধি : দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নওগাঁ জেলায় স্থাপন করা হয় ৩০৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক। বর্তমানে এসব কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নানা সমস্যায় জরাজীর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে জেলার অধিকাংশ কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন। কোথায় কোথায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পরও চলছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। এসব প্রতিকূলতার মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম।
সরেজমিনে জেলার সদর, মহাদেবপুর, নিয়ামতপুর, বদলগাছী উপজেলার ২০টি ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনগুলো সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের দেয়াল ও ছাদে ছোট-বড় ফাটল। ছাদসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। জরাজীর্ণ এসব ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসা। বহু ক্লিনিকে নেই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যকর্মী। অনেক ক্লিনিকে ওষুধ সংকট। কোথাও কোথাও দেখা গেছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও নিয়মিত পানির সরবরাহ ব্যবস্থা নেই। কোথাও আবার শৌচাগার নষ্ট হয়ে অচল হয়ে আছে। সংস্কার না করায় ব্যবহারের অনুপযোগী এসব ভবনে অবস্থান করার সময় রোগী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা আতঙ্কে থাকেন।
জানা গেছে, ক্লিনিকগুলোতে আগে ২৭ ধরনের ওষুধ দেওয়া হতো। তবে বর্তমানে এসব ক্লিনিকে কৃমি, স্ক্যাভিস, গ্যাস, চর্মরোগ, প্রজননজনিত রোগসহ বিভিন্ন রোগের ২২ ধরণের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। তবে চাহিদার তুলনায় ক্লিনিকগুলোতে ওষুধ সরবরাহ কম দেওয়া হয়। এ কারণে অনেক সময় রোগীরা তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ ক্লিনিকে গিয়ে পান না বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার অনেক সময় স্বাস্থ্যকর্মীদের না পেয়ে সেবা না পেয়েই রোগীদের ফিরে আসতে হয়।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার হাজীনগর ইউনিয়নের কন্যাপাড়া কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) ইমরান হোসেন বলেন, ‘ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এই ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিচ্ছি। এই ভবনে যতক্ষণ থাকি ততক্ষণই আতঙ্কে থাকি। মাঝে মাঝে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে।
এসব বিষয়ে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত জেলার যে কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেছি, তাতে খুবই হতাশাজনক চিত্র চোখে পড়েছে। এখানকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এগুলো সংস্কার করেও কাজ চালানো সম্ভব না। ক্লিনিক ভবনগুলো পুননির্মাণ ও সংস্কারের জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, চলতি অর্থবছরে কিছু কিছু ভবন সংস্কার বা পুননির্মাণ কাজ হতে পারে।
মন্তব্য করুন






_medium_1764243681.jpg)
