রেডিট কি কোনো ‘সমস্যাজনক’ প্ল্যাটফর্ম

সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা এক্স (টুইটার)–এর মতো পরিচিত না হলেও, পৃথিবীর নানা প্রান্তে জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম হলো রেডিট। এখানে মানুষ নিজের আগ্রহের বিষয় নিয়ে পোস্ট করে, আলোচনা করে ও অন্যদের মতামত জানতে পারে। এটি মূলত একটি টেক্সট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
তবে আজ (২২ অক্টোবর) সকাল থেকে রেডিটে এক বুয়েট শিক্ষার্থীর অনলাইন কর্যক্রম সংক্রান্ত ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে এই প্ল্যাটফর্ম নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে অনেকেই জানেন না রেডিট কী, এখানে কীভাবে যোগাযোগ হয়, এর নেতিবাচক দিক কী? আর্থাৎ, জনপ্রিয় হলেও কেন বিতর্কিত এই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম?
রেডিট কীভাবে কাজ করে
রেডিট এক ধরনের অনলাইন ফোরাম। এখানে প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য থাকে আলাদা আলাদা গ্রুপ থাকে, যেগুলোকে বলা হয় সাবরেডিট। কেউ চাইলে নিজের মতো করে পোস্ট করতে পারেন। একই সঙ্গে এখানে অনেকেই গোপন নাম বা অ্যানানোমাস আইডি ব্যবহার করেন, যা অনেক সময় স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ দেয়, আবার অনেক সময় অপব্যবহারের কারণও হয়ে দাঁড়ায়।
>> রেডিট হলো এমন একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যবহারকারীরা পোষ্ট, লিংক, ছবি, ভিডিও — যা তাদের আগ্রহের হতে পারে — শেয়ার করতে পারে ও আলোচনা করতে পারে।
>> প্রতিটি বিষয়-আগ্রহের জন্য রয়েছে এক-একটি কমিউনিটি বা সাবরেডডিট।
>> ব্যবহারকারীরা পোস্ট বা মন্তব্য-এর উপরে আপভোট বা ডাউনভোট দিতে পারে; যার ফলে ভালো পোস্ট উঠে আসে, কম ভালো পোস্ট নিচে চলে যায়।
>> রেডিট-এ মূলত স্বাধীন ও ভলান্টিয়ার নিয়ন্ত্রিত কমিউনিটিগুলো কাজ করে, অর্থাৎ প্রতি সাবরেডডিট-এর নিজস্ব নিয়ম থাকতে পারে।
আরও পড়ুনকেন একে ‘সমস্যাজনক’ বলা হয়
রেডিটের বড় সমস্যা হলো এর মডারেশন বা নজরদারি সবসময় একই রকম থাকে না। কিছু গ্রুপে নিয়ম মানা হয়, কিন্তু অনেক জায়গায় অশালীন, ভুল বা বিদ্বেষমূলক মন্তব্য দেখা যায়। অনেকেই গোপন আইডির সুযোগ নিয়ে ঘৃণামূলক বা নারীবিদ্বেষী বক্তব্য দেন।
এই প্ল্যাটফর্মের ইতিবাচক দিকও আছে— যেমন প্রযুক্তি, শিক্ষা, সংস্কৃতি বা স্বাস্থ্য নিয়ে গভীর আলোচনা হয়; তবে ব্যবহারকারীদের দায়িত্ববোধের অভাবেই মাঝে মাঝে এটি বিতর্কের জন্ম দেয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠেছে — রেডিটের মতো গোপন আইডিনির্ভর প্ল্যাটফর্মগুলো কতটা নিরাপদ এবং এগুলোর ব্যবহার কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়?
রেডিট মূলত আলোচনার মুক্ত প্ল্যাটফর্ম — তবে স্বাধীনতার সঙ্গে আসে দায়িত্বও। অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকলেও, সেটি যেন অন্যের সম্মান ও আইনের সীমারেখা অতিক্রম না করে, সেই সচেতনতা সবার আগে জরুরি।
সূত্র: টেক টার্গেট, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা
মন্তব্য করুন