ফেব্রুয়ারি প্রথমার্ধে নির্বাচন, এ নিয়ে দ্বিতীয় কোনো চিন্তা নেই: আইন উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। এ নিয়ে দ্বিতীয় কোনো চিন্তা তাদের নেই।
তিনি একইসঙ্গে উপদেষ্টাদের নিয়ে হওয়া সমালোচনাকে ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং জুলাই সনদে সব রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষর করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টাদের নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে আসা সমালোচনার প্রসঙ্গে ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমার কাছে মনে হয় এটা আমাদের উত্তরণ হয়েছে। আমরা আগের সরকারগুলোর আমলে দেখতাম, যারা সরকারের লোক থাকতো তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে হুমকি দিতো। আর এখন উপদেষ্টা পরিষদে থাকা লোকজনকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পক্ষ থেকে ইচ্ছামতো যা মুখে আসে সমালোচনা করা হচ্ছে। এটা ভালো গণতান্ত্রিক উত্তরণ বলা যায়।”
তবে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, “যারা রাজনৈতিক দল আছেন তাদের বলে রাখি, একই ধরনের কথাবার্তা কেউ আপনাদের উদ্দেশ্যে বললে, সেটা শোনার মানসিকতাও আপনাদের থাকতে হবে।”
বিচার বিভাগীয় সংস্কারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্ট সেক্রেটারিয়েট গঠন নিয়ে তিনি জানান, “এটা বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের অন্যতম প্রস্তাব ছিল। প্রধান বিচারপতির সংস্কার ভাবনার মধ্যেও এটা আছে। আমরা এ লক্ষ্যে অনেক দূর কাজ করেছি। কিছু বিষয়ে এখন কিছু মতভিন্নতা আছে। সেটা নিয়ে আরেকটু আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।”
আরও পড়ুনতিনি আরও জানান, “কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আইনটি উপদেষ্টা পরিষদে পেশ করবো। উপদেষ্টাপরিষদ যদি মনে করে তাহলে এটা পাস করা হবে। এবং আমার ধারণা, আমরা এ সরকারের আমলেই সুপ্রিম কোর্ট পৃথক সেক্রেটারিয়েট করতে পারবো।”
‘জুলাই সনদ’ নিয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমার কাছে মনে হয়, সমস্ত রাজনৈতিক দল যে নিষ্ঠার সাথে এই পুরো আলোচনা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছে, তার একটা ধারাবাহিকতা হিসেবে উনারা সাইন করবেন।”
তিনি স্পষ্ট করেন, “কারণ এটা কনটেন্ট বা জুলাই চার্টারের বিষয়বস্তু নিয়ে হচ্ছে। মূল মতভেদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে, সেটাতো আর সাইন করা হচ্ছে না। সাইন করা হচ্ছে কনটেন্ট বা জুলাই চার্টারের বিষয়বস্তু। সেখানে আমি বিশ্বাস করি, আশা করি সবাই সাইন করবে।”
এছাড়া আসিফ নজরুল বলেন, নির্বাচন নিয়ে যে আশঙ্কা বা মতভেদ তৈরি হচ্ছে, সে বিষয়ে তিনি সরকারের অবস্থান অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেন। উপদেষ্টা বলেন, “যখন এই ধরনের অন্তর্বর্তী সরকার হয়, তখন সব সময়ই এই প্রশ্নটা হয়— নির্বাচন হবে নাকি? যেহেতু সাংবিধানিকভাবে সুনির্দিষ্ট নয়। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ফেব্রুয়ারি প্রথমার্ধে আমরা জাতীয় নির্বাচন করার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। এটা নিয়ে কোনোরকম দ্বিতীয় চিন্তার আলোচনা আমরা কথা প্রসঙ্গেও করি না।”
মন্তব্য করুন