বগুড়া রামকৃষ্ণ আশ্রমে অনুষ্ঠিত হলো কুমারী পূজা

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : চতুর্থ বারেরমতো বগুড়ার শাজাহানপুরের গন্ডগ্রামে অবস্থিত বগুড়া শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম কমিটির আয়োজনে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈদিক শাস্ত্রমতে পুরোহিত বাসুদেব ব্যানার্জি আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মহাঅষ্টমীতে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ পূজা সম্পন্ন করেন। পূজা উপলক্ষ্যে নির্জলা উপবাস থেকে হিন্দু নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সকলে মিলে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন। শেষে বিশ্ববাসির শান্তি ও দেশ জাতির সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দুর্গাদেবীর আশীর্বাদ কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। এতে দূরদুরান্ত থেকে আগত শত শত ভক্তবৃন্দ অংশ নেন।
পুরোহিত বাসুদেব ব্যানার্জি জানান, কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ বেশি প্রকাশ পায়। তাই কুমারীকে দেবী রূপে কল্পনা করে তাকে দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। তিনি আরও বলেন, শাস্ত্রমতে কুমারী পূজার উদ্ভব হয় বানাসুরকে হত্যার মধ্য দিয়ে। কোলাসুর নামক অসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করে নেয়। কোলাসুর স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। সে সকল দেবগণের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী মানবকন্যারূপে জন্মগ্রহণ করেন এবং কুমারী অবস্থায় কোলাসুরকে হত্যা করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। প্রতি বছর দুর্গাদেবীর মহাঅষ্টমী পূজাশেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুনবগুড়া শ্রারামকৃষ্ণ আশ্রমের সভাপতি ডা. বিপ্লব কুমার বর্মণ এবং সেক্রটারি এড. আতিয়া কান্ত বর্মণ জানান, ২০১৮ সালে বগুড়া শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২২ সাল থেকে আশ্রম চত্বরে দুর্গাপূজার সূচনা করে আশ্রম কমিটি। সেই সাথে শুরু হয় কুমারী পূজাও। ২০২২ সালে দেবী রূপে পূজিত করা হয় বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার জিমি কুমার দাস ও সরস্বতী সাহা দম্পতির কুমারী কন্যা শুভশ্রী দাসকে। এরপর ২০২৩ সালে বগুড়া শহরের সেউজগাড়ী এলাকার শান্তনু ব্যানার্জি ও মলি চক্রবর্তী দম্পতির কুমারী কন্যা শ্রেয়া ব্যানার্জি এবং ২০২৪ সালে বগুড়া শহরের খান্দার এলাকার ডাক্তার মিল্টন কুমার সাহা ও বিথি রানী সাহা দম্পতির কুমারী কন্যা নিভৃত মন্দির সাহাকে দেবী রূপে পূজিত করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবার শেরপুর উপজেলার ডাক্তার তন্ময় বর্মন ও প্রিয়াঙ্কা সাহা দম্পতির কুমারী কন্যা তেজশ্রী বর্মণ পঙতি বর্মনকে দেবী রূপে পুজিত করা হলো। ৭ বছর বয়সী পঙতি একটি প্রাইভেট স্কুলের কেজি শ্রেণির ছাত্রী। বগুড়া রামকৃষ্ণ আশ্রমে কুমারী পূজার এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলেও তারা জানান। নিজ শিশু কন্যাকে দেবী রূপে পূজিত করার অনুভূতি জানাতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন পঙতির বাবা-মা। তারা বলেন, এটি অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয়। এ আনন্দ শুধু হৃদয় দিয়েই অনুভব করা যায়, ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
মন্তব্য করুন