ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখনো ‘খুব ইতিবাচক’: মোদী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন এখনো ‘অত্যন্ত ইতিবাচক’ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এই মন্তব্য এমন সময় এলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মোদীর সঙ্গে ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
গতকাল শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকবে। আমি সব সময়ই মোদীর বন্ধু। তিনি একজন মহান প্রধানমন্ত্রী। তবে বর্তমানে তিনি যা করছেন, তা আমার পছন্দ হচ্ছে না। কিন্তু ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ‘খুব বিশেষ’। উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, মাঝে মাঝে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়।
ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার মোদী এক্সে (আগে টুইটার) লেখেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুভূতি ও আমাদের সম্পর্কের ইতিবাচক মূল্যায়নের গভীর প্রশংসা প্রকাশ করছি এবং এর সম্পূর্ণ প্রতিদান দিচ্ছি। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি অত্যন্ত ইতিবাচক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় আমদানি পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। তারা অভিযোগ করেছে, রাশিয়ার তেল কেনার মাধ্যমে ভারত মস্কোর ইউক্রেন হামলার জন্য সহযোগিতা করছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে গত সপ্তাহে চীনে গিয়েছিলেন মোদী। এটি ছিল সাত বছরের মধ্যে তার প্রথম চীন সফর, যা দুই এশীয় শক্তির মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা শীতল অবস্থা দূর করার ইঙ্গিত দেয়। এতে ভারতের প্রতি আরও বিরক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে, রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের ওপরে বাড়তি ২৫ শতাংশসহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারত ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা দিচ্ছে।
আরও পড়ুনকূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, ট্রাম্প বরাবরই খেয়ালি এবং আবহাওয়ার মতো তার মতবদল হয়। তবে ট্রাম্প মতবদল বা সুরবদল করলেও তার বাণিজ্য উপদেষ্টা থেকে বাণিজ্যমন্ত্রী, লাগাতার ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দেগে চলেছেন।
ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠককে ‘লজ্জাজনক’। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া আর ইউক্রেনের যুদ্ধ আসলে ‘মোদীর যুদ্ধ’।
আবার মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক দাবি করেছেন, ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়ে দুই মাসের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি করবে নয়াদিল্লি।
নয়াদিল্লি অবশ্য এখন পর্যন্ত এসব নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বরং স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে না মোদী সরকার। জাতীয় স্বার্থে যেখান থেকে সুবিধা হবে সেখান থেকেই তেল কিনবে ভারত।
মন্তব্য করুন