নাটোরে ডা. আমিরুলকে নিজ হাসপাতালের কক্ষে গলা কেটে হত্যা, আটক ৪

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে নিজ মালিকানাধীন জনসেবা হাসপাতালের ব্যক্তিগত কক্ষে জেলা বিএমএ’র আহ্বায়ক ও জিয়া পরিষদের সহ সভাপতি ডা. এ এইচ এম আমিরুল ইসলামকে (৬০) গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তার গোপণাঙ্গও কেটে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন নার্সসহ ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল রোববার দিনগত রাত একটা থেকে ভোর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তার নিজ কক্ষে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার রাতে ওই কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন ডা. আমিরুল ইসলাম। আজ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে ডাকাডাকি করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। দুপুরের দিকে দরজা ভেঙে কক্ষে প্রবেশ করলে তার গলাকাটা মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন, সিভিল সার্জন ডা.মুক্তাদির আরেফিনসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। একই সাথে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ওই হাসপাতালে কর্মরত তিন নার্সসহ ৪ জনকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
নাটোর থানার ওসি মাহবুর রহমান জানান, গতকাল রোববার রাত একটা থেকে ভোর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তাকে ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। সিআইডি পুলিশের ক্রাইম সীন টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে হত্যাকান্ডের আলামত সংগ্রহ করেছে। পরিবার ও তাদের সংগঠনের অনুরোধে তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন জানান, দুপুর ২টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে মাধ্যমে হত্যাকান্ডের খবর পায় পুলিশ। খবর পেয়ে জেলা পুলিশ, পিবিআই,সিআইডি, ডিবি সহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ শুরু করেন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হাসপাতালের রেজিষ্টার এবং আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরা’র ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সবকিছু বিশ্লেষণ করে এটিকে নৃশংস হত্যাকান্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে তিন নার্সসহ ৪ জনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করা যায়, খুব শিগগিরই এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন হবে। এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুননিহত ডা. এ এইচ এম আমিরুল ইসলাম ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ড্যাবের সাবেক সভাপতি ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়গনস্টিক অনার্স এসোসিয়েশন নাটোর জেলার শাখার সভাপতি ছিলেন।
এদিকে ডা. এ এইচ এম আমিরুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার, সঠিক তদন্ত করে হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়গনস্টিক অনার্স এসোসিয়েশন নাটোর জেলার শাখা।
এ হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল আউয়াল রাজা বলেন, ডা. এ এইচ এম আমিরুল ইসলাম হত্যার সঠিক বিচার চাই। এ হত্যাকান্ডের জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশে কালো ব্যাচ ধারন ও সকল হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্ব স্ব উদ্যোগে ব্যানার টানানো হবে। পরবর্তীতে সংগঠনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কর্মসূচি দেয়া হবে।
মন্তব্য করুন