লালমনিরহাটের গ্রামীণ মেঠোপথের পাশে বাড়ছে গাছ কালাইয়ের চাষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকায় জমির আইল, গ্রামীণ মেঠোপথের ধারে, এমনকি জাতীয় মহাসড়কের পাশে বাড়ছে গাছ কালাইয়ের চাষ। একসময় চাষ কমে গেলেও এখন কৃষকেরা এটিকে সাথী ফসল হিসেবে কচু, হলুদ ও আদার জমিতেও লাগাচ্ছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামের কৃষক হারাধন বলেন, অহরহ বীজ থেকে জন্মানো গাছ কালাইয়ের উচ্চতা জাতভেদে ১০ থেকে ১২ হাত পর্যন্ত হয়ে থাকে। এতে ৫০ থেকে ৬০টি শাখা-প্রশাখা হয়। ডালপালা জ্বালানি হিসেবে, পাতা ও ডগা জৈব সার তৈরিতে কাজে লাগে। পাশাপাশি জমির মাটি ক্ষয় রোধেও সহায়তা করে।
শুকনো অবস্থায় এটি উৎকৃষ্ট মানের খড়ি হিসেবে ব্যবহারযোগ্য। কৃষক রহমান আলী, বকুল ইসলাম ও কমল বর্মন জানান, শুধু লাঙল টেনে বা অল্প গভীর গর্তে বীজ ছিটালেই চারা গজায়। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ফুল আসে এবং অল্পদিনের মধ্যেই ফলন মেলে। দু’একবার কীটনাশক প্রয়োগ করলেই হয়, বাড়তি খরচ তেমন লাগে না।
আরও পড়ুনসরেজমিনে দেখা যায়, জেলার পাঁচ উপজেলাতেই জমির আইল ও রাস্তার ধারে হলুদ, কচু ও কপির আবাদি জমির পাশে গাছ কালাই সবুজে ভরে উঠেছে। কৃষকরা বলেন, স্থানীয়ভাবে এটি গাছ কালাই নামে পরিচিত। খিচুড়ি, সবজি বা শুকনো অবস্থায় ডাল হিসেবে খাওয়া হয়। এজন্য এটিকে গরীবের ডালও বলা হয়।চিকিৎসকদের মতে, প্রোটিনসমৃদ্ধ এই ডাল শরীর গঠনে উপকারী। এর পাতার রস জন্ডিস নিরাময়ে কার্যকর। পাতা ও ডগা পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
লালমনিরহাটের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব জানান, কৃষকেরা জমির আইলে গাছ কালাই চাষ করলে তা একদিকে ফসলের সুরক্ষা দেয়, অন্যদিকে সবুজ সার হিসেবেও ভূমিকা রাখে। খাদ্য, জ্বালানি ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় এ ফসল কৃষকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
মন্তব্য করুন