বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
বগুড়ার ৯ উপজেলায় ওএমএস‘র চাল এবং আটা বিক্রি বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার/সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি: সারিয়াকান্দিসহ বগুড়ার ৯ উপজেলায় প্রায় ২ মাস ধরে ওএমএস‘র চাল এবং আটা বিক্রি বন্ধ রয়েছে। বাজারে চাল এবং আটার দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজ বন্ধ থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা বিপাকে পড়েছে। বাজার থেকে উচ্চ মূল্যে চাল আটা ক্রয় করে অনেকটাই মানবেতর জীবনযাপন করছেন নদী ভাঙন কবলিত সারিয়াকান্দি উপজেলাসহ ৯ উপজেলার মানুষ। অবিলম্বে ওএমএস‘র পণ্য বিক্রির জোর দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষ।
সারিয়াকান্দি উপজেলা খাদ্য অফিস জানিয়েছে, সারিয়াকান্দি পৌর এলাকায় বাঙালি নদীর ব্রিজের ঘাটপার, বারইপাড়া চন্দনবাইশা রোড, কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ, ফাজিল মাদ্রাসা মোড়, পৌর ১ নং ওয়ার্ড এবং উত্তর হিন্দুকান্দি তিনমাথা মোড়ে সরকার অনুমোদিত ৭ টি ওএমএস‘র ডিলার রয়েছে। সেখানে এ বছরে জানুয়ারি মাস থেকে ১৯ মে পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য ওএমএসের চাল এবং আটা বিক্রি হয়েছে স্বল্প মূল্যে। তারপর থেকেই চাল এবং আটা বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এদিকে বাজারে চাল এবং আটার কয়েক দফা মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফলে যমুনা এবং বাঙালি নদী ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ নিরুপায় হয়ে বাজার থেকে চড়া মূল্যে পণ্য কিনছে। উপজেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষদের কেউ বাজারের উচ্চ মূল্যে জিনিসপত্র ক্রয় করতে পারছেন না। ফলে তাদের কেউবা না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এদিকে জানা গেছে, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারণে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলায় সারা বছই ওএমএস‘র চাল এবং আটা বিক্রি চালু থাকলেও সারিয়াকান্দিতে বন্ধ রয়েছে। নদী ভাঙন কবলিত সারিয়াকান্দিতে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষরা এই দ্রব্যমূল্যোর উর্ধগতির বাজারে সারা ছর ওএমএস‘র পণ্য বিক্রি চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন।
ওএমএস‘র উপকারভোগী পৌর এলাকার জহুরা বেগম বলেন, সংসারে উপার্জনের মতো কেউ না থাকায় মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই। মানুষের বাড়িতে কাজ করে যে স্বল্প বেতন পাই তা দিয়ে ওএমএসের চাল এবং আটা ক্রয় করে কোনওমতে ভর্তা ভাত খেয়ে সংসার চলতো। এখন একদিকে যেমন ওএমএস‘র পণ্য বিক্রি বন্ধ, অপরদিকে বাজারে সবগুলো জিনিসের চড়াদামে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
আরও পড়ুনসারিয়াকান্দি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আবু সম্রাট খান বলেন, সারিয়াকান্দি উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০ ইউনিয়নের মানুষ যমুনা এবং বাঙালি নদীর ভাঙনের শিকার। নদী ভাঙনের শিকার হয়ে তাদের কেউ কেউ পৌর এলাকায় বসবাস করছেন। যারা একেবারেই নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। এখানে ওএমএস‘র পণ্য সারাবছর চালু রাখা অনেক আগেই প্রয়োজন ছিল।
বগুড়া সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হারুন অর রশিদ জানান, বগুড়া সদর, কাহালু এবং শিবগঞ্জ উপজেলা ছাড়া অন্য সব উপজেলায় ওএমএস‘র চাল ও আটা বিক্রি বর্তমানে বিক্রি বন্ধ রয়েছে। অচিরেই আবার চালু হবে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক শাহরিয়ার রহমান বলেন, পৌর এলাকার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের অসুবিধার কথা চিন্তা করে ওএমএসের চাল এবং আটা বিক্রি পুনরায় চালু করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন