মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, সালিশের মাধ্যমে বিয়ে

নোয়াখালীর হাতিয়ার মাদ্রাসাছাত্রীকে টানা তিন দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার শিক্ষক শাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। পরে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাতে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নামার বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শাহেদুল ইসলাম নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আবুল কালামের ছেলে। সে নামার বাজার মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক ও স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন। এ ছাড়া তিনি ইসলামী যুব আন্দোলনের নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন কমিটির সদস্য হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন ধরে ছাত্রীকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে ছাত্রী নিজ বাড়িতে ফিরে এসে জানায়, তাকে মুয়াজ্জিনের কামরায় আটকে রেখে টানা ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা শাহেদুল ইসলামকে আটক করলে তিনি সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন এবং বিয়েতে সম্মত হন। এরপর স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে ৬ লাখ টাকা কাবিনে মসজিদে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, হুজুর আমাকে মসজিদের পাশে তার থাকার রুমে রেখে ধর্ষণ করেছেন। বাড়িতে আসার পর বিষয়টি আমার পরিবারকে জানাই। আমরা গরিব মানুষ। আমার বাবা নাই। এখন সালিশে হুজুর আমাকে বিয়ে করবেন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুননিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আমিরুল ইসলাম বাবলু বলেন, শিক্ষক সব দায় স্বীকার করেছেন এবং বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন। আর ভুক্তভোগীও বিয়েতে মত দিয়েছেন, তাই সামাজিকভাবে বিয়ে হয়েছে। যদি বিয়ে না হয়ে মামলা-মোকাদ্দমা হতো তাহলে ওই ছাত্রীর পরিবারের খরচ চালানোর মতো পরিস্থিতি ছিল না। তারা অন্যের সাহায্যে জীবন চালায়।
স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মেয়েটির বাবা নেই, পরিবার অসহায়। ঘটনাটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। তবে ছেলে রাজি হওয়ায় সবার উপস্থিতিতে ৬ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইসলামী যুব আন্দোলনের নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের সহসভাপতি শাহেদ উদ্দিন বলেন, শাহেদুল ইসলাম তিন বছর আগে কমিটির সদস্য ছিলেন। নিষ্ক্রিয় হওয়ায় তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সে যে কাজ করেছে তা অন্যায়। আমরা তার বিরুদ্ধে ছিলাম। তবে স্থানীয় গণ্যমান্যরা যেভাবে সমাধান করেছেন, আমরা সেটায় সন্তুষ্ট।
এ বিষয়ে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সুমন বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ নেই। যদি লিখিত অভিযোগ পাই তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন