ঘরে ঘরে জ্বর, রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম নাটোরের বাগাতিপাড়া হাসপাতাল

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসজনিত জ্বর। সঙ্গে ডায়রিয়ার প্রকোপও বাড়ছে। হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন ছোট থেকে বড় সবাই। একজন আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্য সদস্যরাও পরপর আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন।
শুধু জ্বরই নয়, সঙ্গে থাকছে শরীর ব্যাথা, সর্দি-কাশি, বমি, এমনকি শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি ভুগছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, প্রতিদিন গড়ে ৬৫০ থেকে ৭০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন।
এদের বেশির ভাগই জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় ভুগছেন। পাশাপাশি ডেঙ্গু ও সাপে কাটা রোগীরও দেখা মিলছে। গত রোববার সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই বহির্বিভাগে রোগীর লম্বা লাইন। শিশু-বৃদ্ধ সবাইকে নিয়ে স্বজনদের উপচেপড়া ভিড়। ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও কার্যকর শয্যা মাত্র ৩১টি। ফলে রোগীদের অনেককেই মেঝে বা বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
কেউ কেউ বাধ্য হয়ে ছুটছেন বেসরকারি ক্লিনিকে। কর্তব্যরত নার্সরা জানান, প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন ভর্তি হচ্ছেন। শয্যা সংকটে অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শিশুদের মধ্যে জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপই বেশি।
১০ মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে আসা সাথী আক্তার বলেন, ‘তিন দিন ধরে বাচ্চার জ্বর-কাশি। ডাক্তার দেখানোর জন্য লাইন ধরেই দাঁড়িয়ে আছি।’ আরেক মা আফরোজা বেগম জানান, ‘গত রাত থেকে ছেলে জ্বরে ভুগছে, বমি হচ্ছে, পাতলা পায়খানাও হয়েছে। ডাক্তার ভর্তি দিয়েছেন।’
আরও পড়ুনহাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রেজাউল করিম বলেন, ‘আবহাওয়া পরিবর্তন ও আর্দ্রতার কারণে ভাইরাস জ্বর বাড়ছে। শিশু-বয়স্কদের আলাদা যত্ন্ন নিতে হবে। শরীর শুকনো রাখতে হবে, ঘরে আলো-বাতাস চলাচল রাখতে হবে। আক্রান্তদের অন্যান্যের থেকে দূরে রাখতে হবে এবং অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সূচনা মনোহরা বলেন, ‘বর্ষার আর্দ্র আবহাওয়ায় ভাইরাসজনিত ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব।’
বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো বাগাতিপাড়াতেও ভাইরাসজনিত জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনগণকে সতর্ক থাকতে, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে এবং অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
মন্তব্য করুন