সাদিক কায়েম
আন্দোলনের ক্রেডিট শহীদদের এবং গাজীদের

‘আমি যে সমন্বয়ক তা কখনো দাবি করিনি, পরিচয় দিইনি এবং কোথাও লিখিওনি। সমন্বয়ক পদ নেওয়া বা এর নাম ভাঙিয়ে কোথাও কিছু করা আমার এথিক্সে নেই, এ ব্যাপারে কেউ কোনো প্রমাণও দিতে পারবে না।
কিন্তু খাতা-কলমে সমন্বয়ক না থাকলেও আমি আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছু সমন্বয় বা কো-অর্ডিনেশন ও পলিসি মেকিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম, এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।’
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলামের এক ফেসবুক পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম।
এ সময় তিনি বলেন, “যখন সমন্বয়কদের তালিকা তৈরি হয় এবং কারা এতে থাকবে সেটা প্রস্তুতের সঙ্গেই আমি যুক্ত ছিলাম। বৃহৎ স্বার্থেই আমার নাম দিইনি এবং ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়েও এটির ব্যবহার আমি করিনি, প্রয়োজনও মনে করিনি। তবে কোনো কোনো মিডিয়া হয়তো ‘সংগঠক’ ও ‘কো-অর্ডিনেটর’-এর মতো কয়েকটি শব্দ ব্যবহার করেছে। আন্দোলন চালাতে ক্রুশিয়াল মুহূর্তে আমরা কিছু কাজ করতে পেরেছি, এটা আল্লাহর রহমত ছিল আমাদের জন্য, এটাই আমাদের বড় অর্জন।
সমন্বয়ক বা অন্য কোনো পরিচয় আমার কাছে কিছুই না।”
সাদিক আরো বলেন, ‘আন্দোলনের ক্রেডিট শহীদদের এবং আমাদের গাজীদের, তাঁরাই আমাদের রাস্তা দেখিয়েছেন। আন্দোলনে সবার অংশগ্রহণ ও আন্তরিকতা ছিল। যার কারণেই আমরা সফলতার দেখা পেয়েছি।
আরও পড়ুন৫ জুন থেকে আন্দোলনের শেষ পর্যন্ত আমরাসহ অনেক স্টেকহোল্ডার আন্দোলনে যুক্ত ছিল, এটা কো-অর্ডিনেশনের মাধ্যমে হয়েছে।’
এই শিবির নেতা বলেন, ‘যখন ইন্টারনেট ছিল না, ব্ল্যাক আউট ছিল, কারফিউ জারি ছিল, সমন্বয়কদের অনেকেই যখন আত্মগোপনে ছিল, কাউকে কাউকে যখন গুম করা হয়েছিল, তখন ৯ দফা প্রণয়ন থেকে মাঠ পর্যায়ে আন্দোলন সমন্বয় করা, মিডিয়ায় মেসেজ পৌঁছে দেওয়া, সমন্বয়কদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা, নানা অংশীজনদের সঙ্গে আমরা যুক্ত ছিলাম। বিশেষ করে, ১৯ জুন থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত প্রথম সারির সমন্বয়কদের অনুপস্থিতিতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ হয়েছে।’
তিনি কারো ম্যান নন দাবি করে বলেন, ‘জুলকারনাইন সায়ের, পিনাকী ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসাইন, শহিদুল আলমসহ অন্যান্য সাংবাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বাম-ডান-মধ্যমপন্থী সব দল-মতের অনেকের সঙ্গে এবং অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই আমি যোগাযোগ রক্ষা করেছি। কিন্তু আমি তাঁদের কারো ম্যান নই।
আমি আন্দোলনের স্বার্থেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমাকে কারো ম্যান বা বেল্টের অন্তর্ভুক্ত করে দেওয়া একেবারেই অবান্তর, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
সাদিক কায়েম বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আন্দোলন সফল করার জন্য কতটুকু চেষ্টা করেছে তা অনেকেই জানে। যারা বিষোদগার ছড়াচ্ছে তারা নিজেরাও জানে। জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করে যেখানে আাামাদের সবার ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা, সেখানে এভাবে একে অপরের প্রতি বিষোদগার ছড়ানোটা হতাশাজনক। বিশেষ করে একটা দলের প্রধান হয়ে তার নিজের এ রকম করা অপ্রত্যাশিত। এ রকম রেষারেষির মাধ্যমে শহীদ ও আহতদের পরিবার ব্যথিত হচ্ছে
মন্তব্য করুন