দিনাজপুরে সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম কমেছে বস্তা প্রতি ২শ’ টাকা

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি: ধানের জেলা দিনাজপুরে ধান ও চালের দাম কমতে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে চালের দাম ৫০ কেজির বস্তায় ১৫০ থেকে ২শ’ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। তবে চালের দাম কমলেও পাইকারি বাজারে ক্রেতার দেখা মিলছে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে ধানের দাম কমে যাওয়ায় চালের দাম কমছে। এছাড়া, সরকার ঘোষিত চাল আমদানির সিদ্ধান্ত এবং আগস্ট মাস থেকে শুরু হতে যাওয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির প্রভাবও বাজারে পড়ছে বলে জানিয়েছেন খাদ্য কর্মকর্তারা। এদিকে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে গতকাল বুধবার সেনাবাহিনীসহ যৌথ ভ্রাম্যমাণ আদালত দিনাজপুরের বিভিন্ন অটোরাইস মিলে অভিযান চালিয়েছে।
শহরের প্রধান চালের বাজার বাহাদুর বাজার (এনএ মার্কেট) ঘুরে দেখা যায়, বাজারে জিরাশাইল চাল ৫০ কেজি বস্তা ৩ হাজার ৫৫০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৩ হাজার ৪শ’ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৩ হাজার ১৫০ টাকা থেকে কমে ২ হাজার ৯৫০ টাকা, বিআর-২৯ চাল ২ হাজার ৯শ’ টাকা থেকে কমে ২ হাজার ৮শ’ টাকা, সুমন স্বর্ণ জাতের চাল ২ হাজার ৬৫০ টাকা থেকে কমে ২ হাজার ৫শ’ টাকা, বাসমতি চাল (২৫ কেজি বস্তা) ২ হাজার ২৩০ টাকা থেকে নেমে ২হাজার ২শ’ টাকা, সিদ্ধ সম্পা চাল ১ হাজার ৮২০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সুফী রাইস এজেন্সির মালিক জাহিদ কামাল জাভেদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে চালের দাম কমছে। কিন্তু ক্রেতা নেই। খাদ্য ভান্ডার-এর স্বত্বাধিকারী আলাল হোসেন জানান, চালের দাম কম থাকলেও বাজারে সেই অনুপাতে ক্রেতা নেই। ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। চাল কিনতে আসা দিনাজপুর শহরের পাটুয়াপাড়া এলাকার রুবিনা আক্তার বলেন, জিনিসের দাম বাড়লে আর কমে না। চালের দাম কিছুটা কমেছে, এটা ভালো। তবে সরকারের উচিত দামটা নিয়ন্ত্রণে রাখা।
গত সোমবার সকালে দিনাজপুরের গোপালগঞ্জ ধান হাটে দেখা যায়, বিআর-২৮ জাতের ধান প্রতি মণ ১ হাজার ৪শ’ টাকা, বিআর-২৯ ধান ১ হাজার ৩শ’ টাকা, ৮৮ জাতের ধান ১ হাজার ৩৫০ টাকা, বগুড়া কাটারি ধান ১ হাজার ৬৫০ টাকা, যেখানে চার দিন আগে মণ প্রতি আরও ৪০-১১০ টাকা বেশি ছিল।
বাংলাদেশ হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি শহীদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বলেন, ধানের বাজার পড়ায় চালের দাম কমেছে। এখানে মিলারদের কিছু করার নেই। সরকার যদি অবৈধ মজুদকারিদের দমন করে, তাহলে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে।
দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী জানান, সরকার ৭ আগস্ট পর্যন্ত চাল আমদানির আবেদন নিচ্ছে। এছাড়া আগস্ট মাস থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হচ্ছে। ফলে বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত বুধবার সেনাবাহিনীসহ যৌথ ভ্রাম্যমাণ আদালত দিনাজপুরের বিভিন্ন অটোরাইস মিলে অভিযান চালিয়েছে।
মন্তব্য করুন