ভিডিও বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

সব ধর্মের মানুষ নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই : জামায়াত আমির

সব ধর্মের মানুষ নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই : জামায়াত আমির, ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আজকের এই আয়োজনটা আসলে একটা ভিন্ন মোড়কে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম বাংলাদেশের প্রধান চার ধর্মের লোক আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। এটি একটি ফুলের বাগান। আমরা সবাই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি; জন্মসূত্রে আমরা সবাই প্রিয় দেশের নন্দিত ও মর্যাদাবান নাগরিক। আমাদের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান মুসলমান এই চার ধর্মের অনুসারী মিলেই আমাদের এই বাংলাদেশ। সব ধর্মের মানুষ নিয়ে মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদের কোনো দেয়াল থাকবে না।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সব ধর্মাবলম্বীদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সোমবার (৯ জুন) বিকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতের আমির বলেন, ‘আপনারা অনেকেই অভিযোগের সুরে বলেছেন যে, ‘৫ আগস্টের আগে আমাদেরকে নিয়ে আপনারা কখনই বসেননি; আমরাও যাইনি। আমরা সব সময় আওয়ামী লীগে ভোট দিই-এই ধারণা থেকে আমাদেরকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল।’ এই অভিযোগের সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘শুধু আপনারা নন, ৫ আগস্টের আগে তো আমার মাও আমাকে পাননি, আমার বাবাও আমাকে পাননি, আমার স্ত্রী-সন্তানরাও আমাকে পায়নি। এটা শুধু আমার কথা বলছি না, আমাদের কথা বলছি। ৫ আগস্টের আগে আমাদেরকে স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে দেওয়া হয়নি। আমি চোর-ডাকাত নই, দখলদার নই, চাঁদাবাজ নই, খুনি কিংবা সন্ত্রাসীও নই। তা সত্ত্বেও আমাকে কেন কয়েকবার জেলে রাখা হলো? এটা শুধু আমার ব্যাপারে না এই ধরনের ঘটনা লক্ষ লক্ষ রয়েছে। আমাদেরকে সমাজের মানুষের সুখ-দুঃখ, ব্যথা, বেদনার অংশীদার হতে দেওয়া হয়নি। তারপরও যেখানে খবর পেয়েছি সারা বাংলাদেশে দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।’ 

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বরগুনায় পঞ্চম শ্রেণির একটি মেয়ের ইজ্জত নষ্ট করা হয়েছে। মেয়েটির বাবা থানায় মামলা করেছিলেন। লম্পটরা মামলা করার কারণে তার বাপকেও খুন করল। তিনি সনাতন ধর্মের অতিসাধারণ একজন মানুষ; মুরগি বিক্রির দোকানে চাকরি করতেন। এই দিয়ে তার ছোট্ট সংসারটি চলত। তিনটা মেয়ের মধ্যে নির্যাতিত মেয়েটি বড়। কোলের শিশুটির বয়স মাত্র আড়াই মাস। আমি সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের পাশে কারা কারা দাঁড়িয়েছেন? তারা বললেন, ডিসি সাহেব একজনের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। জিজ্ঞেস করলাম, আর কিছু কী তারা বলেছে? জবাব পেলাম, মামলাটা তারা দেখবেন। জিজ্ঞেস করলাম, এখন আপনারা চলবেন কিভাবে? তিনি বললেন, পরিবারের একমাত্র অভিভাবক মারা গেছেন; এই পরিবারে এখন আর কোনো পুরুষ সদস্য নাই। পরিবারটিতে এখন বিধবা স্ত্রী, আর তিনটা এতিম মেয়ে। মহিলাটি তখন কেঁদে কেঁদে প্রায় বেহুশ হওয়ার উপক্রম। সে হাউ মাউ করে বলল যে, আমরা এখন বাঁচব কী করে? কী খাব? কারা আমাদেরকে খাবার দেবে? আমাদের সংসারের একমাত্র বাতি সে তো নিভেই গেল। আমি তখন আড়াই মাসের বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিয়ে বলেছিলাম, এই বাচ্চাটির দায়-দায়িত্ব আল্লাহর ওপর ভরসা করে আমরা নিলাম। আজ পর্যন্ত আমাদের সংগঠন আল্লাহর অপার মেহেরবানিতে প্রতি মাসে এই অসহায় পরিবারটির আর্থিক ভরণ-পোষণ দিয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিশ্চিত পেনাল্টি না পাওয়ায় হতাশ কাবরেরা

হাসপাতালগুলোতে আবারও শুরু হচ্ছে করোনা পরীক্ষা

দেশে ফিরলেন ৪৪০৮ হাজি, মৃত্যু ২২

ইসরায়েলি দুই মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাজ্যসহ পাঁচ দেশের নিষেধাজ্ঞা

প্রতিরক্ষা ব্যয় ২০ শতাংশ  বাড়ালো পাকিস্তান

প্রধান উপদেষ্টার সাথে টিউলিপের সাক্ষাত চেয়ে চিঠি নিয়ে যা জানালেন প্রেস সচিব