বগুড়ার ধুনটে তিল চাষে তিনগুনের বেশি লাভের আশায় কৃষক

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : খরচ কম,রোগবালাই কম,আবার তেমন পরিচর্যার প্রয়োজনও পড়ে না-এই সহজ ব্যবস্থাপনার কারণেই বগুড়ার ধুনট উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তিল চাষ। স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি সারাদেশে তিলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাজারে মিলছে ভালো দাম।
অন্য ফসলের তুলনায় তিনগুণ লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের মাঝে। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার প্রভাবে হারিয়ে যাওয়া তেলবীজ ফসল তিল আবারও ফিরে আসছে মাঠে। তিল চাষ কৃষকদের কাছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। ভোজ্যতেল হিসেবে তিলের তেলের চাহিদা বাড়ায়, চাষিরা এই ফসলকেই দেখছেন আয়ের নতুন উৎস হিসেবে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় গত বছরের তুলনায় এ বছর তিলের আবাদ বেড়েছে। অথচ এক সময় এই এলাকায় তিলের আবাদও কমতে কমতে চলে গিয়েছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে তিল চাষের প্রতি কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের ফলে তিল চাষের ব্যাপারে আবারও কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। তারই ফলশ্রুতিতে কয়েক বছর ধরে তিলের আবাদ বাড়তে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪৮ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের তিল চাষ হয়েছে।
নতুন করে তিল চাষ বাড়ার কারণ হিসেবে কৃষকরা জানায়, এক সময় দেশি জাতের তিলের চাষ করে অন্যান্য ফসলের তুলনায় তেমন একটা লাভ হতো না। তাই এলাকার মানুষ তিলের আবাদ প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল। বর্তমানে দেশে উচ্চ ফলনশীল তিলের জাত উদ্ভাবন হওয়ায় ও কৃষি বিভাগের তদারকিতে আবারও মানুষ তিল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এক বিঘা জমিতে তিল চাষে খরচ হয় প্রায় ৩ হাজার টাকা। প্রতিবিঘায় তিল উৎপাদন হয় প্রায় ৪ মণ। বর্তমান বাজারে প্রতিমণ তিল ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুনধুনট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোছা: নুর নাহার দৈনিক করতোয়া’কে বলেন, একজন কৃষক জমিতে তিল চাষ করে নানারকম উপকার পেয়ে থাকেন। যেমন- তিল গাছের যেসব পাতা জমিতে পড়ে তা পচে মাটির সাথে মিশে সবুজ সারের কাজ করে তাতে জমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি পায়। একই জমিতে কয়েক বছর তিলের আবাদ করলে অন্যান্য ফসলের আবাদ করতে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না।
এ ছাড়া গাছের কান্ড অর্থাৎ ডাঁটা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তিল থেকে ভোজ্য তেল ও খৈল পাওয়া যায়। তিল থেকে উৎপাদিত তেল নানা কাজে ব্যবহৃত হয়, যা সরিষা তেলের বিকল্প হিসেবেও জনপ্রিয়। তিল চাষের মাধ্যমে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, তেমনি জমির জৈব গুণও বাড়বে। এ কারণে আমরা কৃষকদের তিল চাষে উৎসাহ দিচ্ছি।
মন্তব্য করুন