ভিডিও শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

৪০ রোহিঙ্গাকে সাগরে ফেলে দেয় ভারত

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদের আন্দামান সাগরে একটি নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে নামিয়ে দেয় । ছবি: সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৮ মে সন্ধ্যায় দিল্লির এক তরুণ রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমার থেকে একটি ফোনকল পান। ফোনের অন্যপাশে ছিলেন তার বাবা-মা। তিনি বলেন, আমার বাবা-মা আমাকে জানান যে তাদের সমুদ্রের মাঝখানে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

মাত্র দুই দিন আগেই তিনি দেখেছিলেন পুলিশ তাদের বাড়ি থেকে তার বাবা-মাসহ আরও ৪১ জনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর ফোনে তার বাবা-মা তাকে এক নির্মম অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেন। যেখানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদের আন্দামান সাগরে একটি নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে নামিয়ে দিয়ে কেবল লাইফ জ্যাকেট দিয়ে সাঁতরে মিয়ানমারের ভূখণ্ডে পৌঁছাতে বাধ্য করে। তারা যখন উপকূলে পৌঁছান তখন এক জেলের কাছ থেকে ফোন নিয়ে ছেলেকে কল করেন। ছেলেটি বলেন, তারা ভয় পাচ্ছিলেন যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের যে কোনো সময় ধরে নিয়ে যেতে পারে।

তবে ভাগ্যক্রমে তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নয়, বরং ২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে নির্বাসনে থাকা মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ (এনইউজি)-এর নিয়ন্ত্রণাধীন এক এলাকায় উঠে পড়েছিলেন। এনইউজি জানিয়েছে, তাদের সশস্ত্র শাখা ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’-এর হেফাজতে ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে।

তাদের মানবাধিকার বিষয়ক উপমন্ত্রী এবং সরকারের একমাত্র রোহিঙ্গা সদস্য আউং কিয়াও মোয়ে জানান, উদ্ধার হওয়া শরণার্থীরা বলেছে যে তাদের জোরপূর্বক সমুদ্রে নামিয়ে দিয়ে ভারত থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি যে তারা নিরাপদ এবং প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা পাচ্ছেন। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থাও করা হবে।

আরও পড়ুন

সংবাদমাধ্যম স্ক্রোল ফোনকলের রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখেছে, যেখানে রোহিঙ্গারা তাদের সমুদ্রপথে জোরপূর্বক বিতাড়নের কথা জানিয়েছে। এক কল রেকর্ডিং-এ একজন শরণার্থী অভিযোগ করেন, তাদের মারধর করা হয়েছিল এবং ভুলভাবে অভিযোগ করা হয় যে তারা পাহেলগামের সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত এবং হিন্দুদের হত্যা করেছে। যার কোনো প্রমাণ নেই। স্ক্রোল এনইউজি এর দেওয়া ৪০ জনের একটি তালিকা এবং দিল্লিতে আটক ৪৩ জনের তালিকা মিলিয়ে দেখে ৩৬ জনের পরিচয় মিলে গেছে। একজন রোহিঙ্গা শরণার্থী দিল্লিতে থাকা তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের ছবি চিনে স্বস্তি প্রকাশ করেন।

বিশেষজ্ঞারা জানিয়েছে, এই পদ্ধতিতে বিতাড়ন ভারতের আইন ও আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনের লঙ্ঘন। এসব শরণার্থীরা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থায় (ইউএনএইচসিআর) নথিভুক্ত ছিলেন এবং আইডেন্টিটি কার্ড বহন করতেন। পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিভারিটিজ এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক আইন এবং ভারতের নিজস্ব আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। সূত্র : স্ক্রোল ডট ইন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এক ছাগলের পাঁচটি বাচ্চা

স্ট্রবেরি খেলে মিলবে যেসব উপকার

গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২ নেতাকে আটক 

মুন্সীগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার পর পালিয়েছেন স্বামী

খুলনায় মাহিন্দ্রাকে ট্যাঙ্কলরির ধাক্কা, নিহত ৩, আশঙ্কাজনক ৪

লালমনিরহাটে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু