সাম্য হত্যার পেছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে : রিজভী আহমেদ
_original_1747315656.jpg)
স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, এর পেছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে।
তিনি বলেন, রিজভী বলেন, ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা সবাই একটু স্বস্তিতে থাকতে চেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে ক্লাসে যাবে, ক্লাস থেকে বের হবে। এখন কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ‘অরাজক’ পরিস্থিতি। তরুণ ছাত্রের লাশ ক্যাম্পাসে, রক্ত ঝরছে। এখন তো আর আওয়ামী দোসররা নেই। এখন যারা ক্ষমতায় আছেন, সকল বিরোধী দলীয়, যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, সমর্থন করেছেন। তাহলে এখন কেন লাশ পড়বে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী-একথা বলেন। উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম, ঢাকা-এর আয়োজন করে।
রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা দেখেছি ফ্যাসিবাদী আমলে পার্শ্ববর্তী দেশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে আবরারকে হত্যা করা হয়। জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা, ৭১ এবং স্বাধীনতার পক্ষে কথা বললে তার জীবন চলে যায়। অর্থাৎ দেশের পক্ষে, যারা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, দেশের স্বাধীনতার পক্ষে, যারা জাতীয় সংগীতের পক্ষে তাদের জীবন চলে যায়। আমি এজন্যই বলেছি, নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ আছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২ টার সময় ছাত্রদল নেতা সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। কি অন্যায় ছিল সাম্যের? আমার তো মনে হয়Ñএখানে রাজনৈতিক কারণ আছে। তিনজন ভবঘুরে সাম্যকে কেন হত্যা করবে? কয়েকদিন আগে শাহবাগে জাতীয় সংগীত বন্ধের আন্দোলনের বিরুদ্ধে সাম্য একটি পোস্ট করেছিল। এটাই কি হত্যার কারণ?
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে রিজভী আহমেদ বলেন, আপনারা ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখুন। ভবঘুরেদেরকে গ্রেপ্তার করেছেন, মানুষ এসব বিষয় সহজভাবে নেয় না। মানুষ সহজভাবে নিত যদি, সবসময় সত্য এবং ন্যায় অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা নিত। কিন্তু সেটা তারা নেয়নি। যেমন আবরার হত্যাকান্ডে নেননি, তেমনি অনেক ঘটনাও নেননি। আজকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হাসিনা নেই, দোসররা নেই, রক্তপাত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকান্ড হচ্ছে। জানুয়ারি মাসে তফাজ্জল নামে একজনকেও হত্যা করা হয়েছে। ক্যাম্পাস হবে শান্তি, এখানে থাকবে শান্তির পতাকা। সেখানে কেন রক্তপাত হবে। এটা তো হওয়ার কথা নয়। তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চাযের কাছে ছাত্রদলের নেতারা গিয়েছিল। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মারা গেছে। আপনি বিরক্ত হয়েছেন, ক্ষুব্ধ হয়েছেন, আপনি শুনতে চান না। কারণ সাম্য ছাত্রদল করে। আপনার রাজনৈতিক চিন্তা দর্শন কি সেটা আমরা ইতোমধ্যে জেনে ফেলেছি। যারা জাতীয়তাবাদের পক্ষে ওখানে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে ছাত্র সংগঠন করে, সেটা আপনি পছন্দ করেন না। আপনার উচিত ছিল প্রথমে সেই লাশ দেখা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। ভাইস চ্যান্সেলররা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিশেষ দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে নেমে যান, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনোই শান্তি বয়ে আনবে না।
মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন। এতে অংশ নেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা আবুল কাশেম, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সিনিয়র সদস্য মাসুদ রানা লিটন, শাহাদত হোসেন প্রমুখ।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুস্তাকিম বিল্লাহর পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও অংশ নেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাবিবুল বাশার, সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুল আওয়াল, সাবেক সহ-সভাপতি জামিল হোসেন, সাবেক সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক হাসনাইন নাহিয়ান সজীব, যুগ্ম-সম্পাদক হাসানুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিংকু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাজল, ছাত্রদল নেতা মশিউর রহমান মহান, মিসবাহ, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক নুর হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক মিনার হোসেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা মেজবাহ, অনিক, শোয়াইব, অন্তর, সাদমান, রুমান প্রমুখ। এছাড়া ‘জিয়া শিশু ফোরাম’-এর আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর কৃষকদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক তারেক আহম্মেদসহ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের অসংখ্য নেতা-কর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নেন।
মন্তব্য করুন