কৃষিতে বাড়ছে সোলারের ব্যবহার, সেচ পাম্প ছাড়াও স্প্রে মেশিনেও সোলার লাগিয়ে সাশ্রয়ী কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় কৃষি প্রযুক্তিতে দিন দিন বাড়ছে সোলারের ব্যবহার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোলার দিয়ে পাম্পমেশিন চালিয়ে সেচ দিতে শুরু করেছে বগুড়ার শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর উপজেলার অনেক মাঠে। এখন আবার দেখা মিলছে সোলার সিস্টেম স্প্রে মেশিন। সূর্য রশ্মি থেকে প্রাপ্ত সৌরশক্তি কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তেল ও বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে কাজ করছে।
এতে করে কৃষিতে প্রাকৃতিক শক্তিকে ব্যবহার করে দেশে একটি সবুজ ভবিষ্যতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। কৃষিতে সমৃদ্ধ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার উথলীর রথবারি এলাকার এক কৃষক পরিবারের সন্তান তোতা মোল্লা কৃষি প্রযুক্তিতে এক ধাপ এগিয়ে আছেন। তিনি এলাকায় কীটনাশক ও পানি ছিটানোর জন্য তার কৃষি জমিতে ব্যবহার করেন সোলার সিস্টেম স্প্রে মেশিন। এতে তিনি যেমন উপকৃত হচ্ছেন তেমনি আশে পাশের অন্য জমিতে অল্প সময়ে কীটনাশক স্প্রে করে নিজের সংসারের জন্য বাড়তি আয় করছেন।
কৃষক তোতা মোল্লা জানান, তিনি একজন বর্গা চাষী। পাঁচ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে সবজি, আলু, ধান চাষ করেন। আর এসব চাষাবাদে সার যেমন অপরিহার্য তেমনি পোকামাকড় দমনে কীটনাশক দেয়াটাও জরুরী। ধান ক্ষেতসহ বিভিন্ন ক্ষেতে কীটনাশক ছিটাতে হাত দিয়ে হাওয়া পদ্ধতিতে স্প্রে করতে হয়। এতে হাতলে চাপ দিতে দিতে কৃষকের হাত ব্যথা হয়ে যাবার কারণে বেশি জমিতে কীটনাশক স্প্রে করা যায় না।
এজন্য তোতা মোল্লা কিনেছেন সোলার সিস্টেম স্প্রে। এতে দাম পড়েছে ৩৮শ’ টাকা। তিনি জানান, সোলার স্প্রে সূর্য না থাকলে ব্যাটারিতে চলে তবে সূর্য থাকলে দ্রুত মেশিন দিয়ে পানি ছিটানো যায়।
কৃষক পরিবারের ছেলে তোতা মোল্লা জমি না থাকলেও কৃষির নতুন নতুন দিক নিয়ে তার ধারণা অনেক। এজন্য তিনি সরকারি মসলা গবেষণা কেন্দ্রও বেসরকারী সংস্থা টিএমএসএসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কৃষির ওপর বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিভাবে ভাল ফসল ফলানো যায়, কিভাবে বীজ সংরক্ষণ করা যায়, কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে জমির কীটনাশক দমন করা যায়।
আরও পড়ুনআবার উপকারী পোকা গুলো কতটা পরিমান কীটনাশক ব্যবহারেও ঁেবচে থাকে সেই ধারণাও নিয়েছেন। পশুপালনের জন্যও তিনি ট্রেনিং করেছেন পশু হাসপাতাল থেকে। এসব প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও ঘুরে এসেছেন।
তিনি নিজের জমিতে কাজের পাশাপাশি অন্যের জমিতেও সোলার স্প্রে দিয়ে কীটনাশক ও পানি স্প্রে করে দেন। এক ড্রাম স্প্রে করতে তিনি নেন ৬০ টাকা। এক বিঘা ধান ক্ষেতে স্প্রে করতে লাগে ৩ ড্রাম পানিসহ কীটনাশক। এতে তার আয় হয় ১৮০ টাকা। তার এই স্প্রে মেশিন এলাকার কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মো: আব্দুল হান্নান জানান, বেশ কয়েকবছর হলো কৃষিতে সৌরশক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সোলার চালিত পাম্প মেশিন দিয়ে সেচ দেয়া ছাড়াও সোলার স্প্রে দিয়ে কীটনাশক ও পানি ছিটানোর পদ্ধতিটি কৃষিক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন