ভিডিও শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় অলি

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় অলি

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : অদম্য মেধাবী আল আমিন অলি হোসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ইউনিটে (কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার প্রাপ্ত নম্বর- ৭৯.২৫। এই শিক্ষার্থীর বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার হায়াৎখাঁন এলাকায়।

তিনি জহুরুল হক-কল্পনা দম্পতির ছেলে। বাবা জহুরুল হক (৫২) একজন রিকশাচালক, মা কল্পনা বেগম (৪২) স্থানীয় একটি কারুপণ্যের শ্রমিক। শত কষ্ট আর দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে সন্তানের এমন সফলতায় উচ্ছ্বসিত এই দম্পতি।

২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে উলিপুর সরকারি কলেজ থেকে মানবিক শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন আল আমিন হোসেন অলি। এর আগে ২০২২ সালে উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পান। পরে তাকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে লেখাপড়ার জন্য দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করে।

আল আমিন হোসেনের বাবা জহুরুল হক জানান, ‘অনেক কষ্ট করে ছাওয়াটাকে (ছেলেকে) পড়াইছি। এর মধ্যে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতাও পেয়েছি। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। খুবই খুশি হয়েছি। আমি গরির মানুষ নুন আনতে পান্তা ফুরায়। জমিজমা বলতে দুই শতক বসতবাড়ি। ১৫ বছর বাদাম বিক্রি করেছি। গ্রামে ফেরি করে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে রিকশা চালাই। এখন বয়স হয়েছে ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারি না। ঋণ করে ব্যাটারিচালিত একটি রিকশা বানিয়েছি।’

আরও পড়ুন

জহুরুল হকের স্ত্রী কল্পনা বেগম বলেন, ‘ছয় মাস বয়সী কোলের সন্তান রেখে কারুপণ্যে যাই। তখন থেকেই কারুপণ্যে কাজ করি। বসুন্ধরা গ্রুপ আমার ছেলেটাকে শিক্ষা বৃত্তি দিয়েছিল। এটা দিয়ে আইএ (এইচএসসি) পর্যন্ত লেখাপড়া করতে পেরেছে। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। ভর্তি হতে নাকি অনেক টাকা লাগবে। তাছাড়া ঢাকায় পড়তে অনেক টাকা খরচ হবে, কীভাবে কি হবে কিছু বুঝতেছি না। আল্লাহর রহমত ছাড়া কোনো উপায় নেই’।

উলিপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক খায়রুল ইসলাম বলেন, যাদের বাইিরে গিয়ে ভর্তি কোচিং করার মতো সাধ্য নেই তাদেরকে ‘স্বপ্নপূরণ’ অ্যাডমিশন অ্যান্ড একাডেমিক কেয়ারের মাধ্যমে ভর্তি কোচিং করানো হয়। আলামিন হোসেন অলিও এই কোচিং এর একজন শিক্ষার্থী। সে অত্যন্ত মেধাবী, বিনয়ী, ভদ্র এবং সম্ভাবনময় ছাত্র। তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য প্রস্তুত করতে বিনামূল্যে সহায়তা করেছি। অলি হোসেন দেখিয়ে দিয়েছে ঠিক দিকনির্দেশনা পেলে গ্রাম থেকেও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে চান্স পাওয়া যায়।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘কালো মানিক’কে গ্রহণ করেননি খালেদা জিয়া

করোনায় ঢাকায় ১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩

কালুরঘাট সেতুতে ট্রেন-অটোরিকশা-বাইক সংঘর্ষ

ঈদের কয়েকদিন চার লাখ দর্শনার্থীর আশা চিড়িয়াখানায়

আন্দোলন স্থগিত করল পবিস

বুলু ও দুদুকে সতর্ক করল বিএনপি