উত্তরের বিভাগীয় নগরী রংপুরের রেলওয়ে স্টেশনটি এখনও জরাজীর্ণ

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : বিভাগীয় নগরী হওয়ার পরেও বি-গ্রেডের হিসেবে চলছে রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম। কাঙ্খিত প্রত্যাশানুযায়ী রংপুর রেলস্টেশনের তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। উত্তরের বিভাগীয় নগরী রংপুরের রেলওয়ে স্টেশনটি জরাজীর্ণ ছাড়াও রয়েছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। এ কারণে ক্ষোভ বেড়েছে মানুষের মনে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে জেলা থেকে রংপুর বিভাগ হয়েছে। পৌরসভা বিলুপ্ত হয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সিটি কর্পোরেশন।
বেড়েছে নগর ও জেলার জনসংখ্যাও। রেলওয়ে স্টেশন রি-মডেলিং প্রকল্পের আওতায় দেশের অন্যান্য বিভাগীয় পর্যায়ের স্টেশন বদলে গেলেও প্ল্যাটফর্ম উঁচু করা আর বাউন্ডারি ওয়াল তৈরিতে সীমাবদ্ধ এর উন্নয়ন। যেখানে স্টেশনে ট্রেন বাড়ার কথা সেখানে ৪টি লোকাল ট্রেন ও ২টি ডেমু ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
অবিলম্বে রংপুর থেকে ঢাকাগামী রেলের সংখ্যা বৃদ্ধি করাসহ রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিকায়নের দাবি রংপুরবাসীর। ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সরকার দেশ শাসন করলেও রংপুর রেলওয়ে স্টেশনকে এ-গ্রেডে উন্নীত করার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
বিভাগীয় শহরের এ স্টেশনে যাত্রীদের বিশ্রামাগার ও শৌচাগারের অবস্থাও শোচনীয়। একটি মাত্র টয়লেটের সামনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় সব শ্রেণির যাত্রীদের। একটি মাত্র শৌচাগারে নারী-পুরুষকে অনেক হয়রানি হতে হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুরের সমন্বয়ক মুহম্মদ রাজিমুজ্জামান হৃদয় বলেন, বিভাগীয় নগরী রংপুরে বর্তমানে ১০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। প্রতিদিন রংপুর থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করে থাকে। রেলভ্রমণ তুলনামূলক নিরাপদ হলেও রংপুরের মতো জেলায় রেলওয়ে স্টেশনসহ রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি।
আরও পড়ুনবিভাগীয় শহর হিসেবে এ স্টেশনটি একেবারেই অবহেলিত ও বেমানান। নির্দিষ্ট সীমানা প্রাচীর না থাকায় এখানে সবসময় বহিরাগতদের আনাগোনা থাকে। রাত হলে সেটা অনেক বেশি পরিমাণে হয়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে এ স্টেশন দিয়ে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গ মেইল, দিনাজপুর কমিউটারসহ ৭ জোড়া ট্রেন আসা-যাওয়া করে। প্রতিদিন এ স্টেশন দিয়ে প্রায় ৭ হাজার যাত্রী দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করছে। রংপুর রেলস্টেশনের পশ্চিমে বন্দর শ্যামপুর এবং পূর্ব দিকে মীরবাগ বাজার স্টেশনটি বি-গ্রেডের। কাগজে কলমে এ দুই রেলস্টেশনের সাথে রংপুর স্টেশনের কোনো পার্থক্য নেই।
স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট শংকর গাঙ্গুলী বলেন, রংপুর বিভাগীয় শহর হলেও এ রেলস্টেশনটি ‘বি’ গ্রেডের। কিছুদিন আগে ছাত্ররা স্টেশনে এসে বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে। রংপুর স্টেশনের যাবতীয় উন্নয়নের কাজের বরাদ্দ পাস হয়েছে কয়েক মাস আগে।
সরকার পরিবর্তনের পর পরবর্তী পরিস্থিতিতে কাজগুলো থমকে আছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে ছাত্র-জনতার দাবির বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই রংপুরকে একটি আধুনিক মডেল স্টেশনে রূপ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।
মন্তব্য করুন