ভিডিও বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫

সিরাজগঞ্জে ব্যতিক্রমী প্রকৃতির পাঠশালা

সিরাজগঞ্জে ব্যতিক্রমী প্রকৃতির পাঠশালা

সিরাজগঞ্জ  প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে গড়ে তোলা হয়েছে এক ব্যতিক্রম ধরনের প্রকৃতির পাঠশালা। যেই পাঠশালাতে নেই কোনো খাতা-কলম, নেই পরীক্ষার চাপ বা শ্রেণিকক্ষের চার দেয়াল। যেখানে শিক্ষার্থীরা শেখে গাছের পাতা গোনা, মাটির গন্ধ নেয়া, বাতাসে কান পেতে প্রকৃতির ভাষা বোঝা। এই পাঠশালায় বইয়ের বদলে গাছই শিক্ষক, আর প্রকৃতিই পাঠ্যবিষয়।

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট গ্রামে গড়ে ওঠা এ পাঠশালার নাম ‘পরিবেশ ও প্রকৃতির পাঠশালা’ পাঠশালাটি গড়ে তুলেছেন বৃক্ষপ্রেমী মাহবুবুল ইসলাম পলাশ। এই ব্যতিক্রমী শিক্ষালয় কেবল প্রকৃতিকে জানা বা গাছ লাগানোই নয়। এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রকৃতি-সচেতন, দায়িত্বশীল ও মানবিক করে গড়ে তোলার এক আত্মবিশ্বাসী প্রয়াস।

তিনি ২০০০ সাল থেকেই বৃক্ষরোপণ, বিরল প্রজাতির গাছ সংরক্ষণ ও বিনামূল্যে গাছ বিতরণ করে আসছিলেন। তার শুরুর সেই ছোট্ট প্রচেষ্টাই সময়ের সাথে রূপ নিয়েছে এক পরিপূর্ণ আন্দোলনে। পরে তার এই আন্দোলনের সাথে যোগ হয় এই পাঠশালা।

২০২০ সাল থেকে পলাশ শুরু করলেন একটি নিরীক্ষাধর্মী কাজ। মাত্র ৪ /৫ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে তার নিজস্ব গাছে ভরা বাগানে শুরু করলেন প্রকৃতির পাঠশালা। উদ্দেশ্য ছিল শিশুরা প্রকৃতির সাথে বেড়ে উঠুক, গাছকে ভালোবাসুক, আর পরিবেশের প্রতি তাদের মধ্যে গড়ে উঠুক সহানুভূতি ও দায়িত্ববোধ।

বর্তমানে সবুজ পাঠশালায় ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী। এই শিক্ষার্থীদের বয়সের কোনো বাধা নেই এখানে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, সবাই তার প্রকৃতির পাঠশালার ছাত্র। তাদের শেখানো হয় কীভাবে গাছের যত্ন নিতে হয়, কীভাবে একটি বৃক্ষ পরিবেশে ভূমিকা রাখে এবং কীভাবে প্রকৃতির প্রতিটি উপাদানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা গাছের জন্ম, বৃদ্ধি, রোগ-বালাই, পরিচর্যার প্রক্রিয়া সবকিছু হাতে-কলমে শিখে নেয়। প্রতি মাসে ২/৩ দিন তিনি নিজেই  এই পাঠশালায় পাঠদান করা হয়। পাঠশালাটি পরিচালিত হচ্ছে পলাশের নিজের হাতে গড়া ৪ হাজার গাছের বাগানে।

আরও পড়ুন

মাহবুবুল ইসলাম পলাশ এখন পর্যন্ত বিনামূল্যে এক লাখের বেশি গাছের চারা  রোপণ ও বিতরণ করেছেন। পরিচালনা করছেন সিরাজগঞ্জের প্রথম জিরা চাষ, গড়ে তুলেছেন ‘বিরল বৃক্ষ ও একটি সফল কৃষি উদ্যোগ হিসেবে গড়ে তুছেন নবান্ন কৃষি খামার।

এবিষয়ে মাহবুবুল ইসলাম পলাশ বলেন, বিপন্ন প্রজাতির গাছ রক্ষা এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রায় ২০ বছর যাবত গাছ সংগ্রহ করছি। এছাড়া গাছের চারা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করছি। গাছের উপকারিতা সম্পর্কে ছাত্রদের ধারণা দেয়া হচ্ছে। প্রতি মাসে ২/৩ দিন ক্লাস নিয়ে তাদের উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে। এতে ছাত্রদের মাঝে গাছ সম্পর্কে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে।

আমি ৬৪ জেলায় বৃক্ষরোপণের লক্ষ্যে কাজ করছি, এরইমধ্যে ১৩টি জেলায় সম্পন্ন হয়েছে। আমি চাই, একদিন গড়ে তুলবো একটি কৃষি জাদুঘর এবং গাছের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণাগার, যাতে এসব গাছ নিয়ে গবেষণা হয়, নতুন প্রজন্ম আরও শিখতে পারে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মুনমুনের তিন সিনেমা মুক্তির প্রতীক্ষায়

সবজিতে স্বস্তি নেই ক্রেতাদের

পরিবেশ রক্ষায় পোস্টার ছাড়াই নির্বাচনী প্রচারণার ঘোষণা প্রার্থীর

বগুড়ায় এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতন

যুক্তরাষ্ট্র যাবার আগে বাবা, মা আর ভাইকে নিয়ে যা বলে গেলেন আনিসা

ডাকসু নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সেনা মোতায়েনকে সন্দেহজনক বললেন উমামা ফাতেমা