ভিডিও সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:১৫ রাত

জয়পুরহাটে তিন হিমাগার মালিকের বিরুদ্ধে কৃষকের আলু বীজ বিক্রির অভিযোগ

জয়পুরহাটে তিন হিমাগার মালিকের বিরুদ্ধে কৃষকের আলু বীজ বিক্রির অভিযোগ

জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের তিন হিমাগারের মালিকের বিরুদ্ধে গোপনে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের প্রায় ৮০ হাজার বস্তা (প্রতি বস্তা ৬০ কেজি) আলু বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কৃষকরা বলছেন, বাজারে বীজ আলুর দাম বেশি হওয়ায় তারা নিজেদের উৎপাদন করা আলু বীজ হিমাগারে রেখেছিলেন। কিন্তু হিমাগার মালিকরা গোপনে তাদের আলু বিক্রি করেছেন। ফলে বাজার থেকে তাদের চড়া দামে বীজ কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতে আলু চাষে তাদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে।

হিমাগার মালিকরা বলছেন, আলুর দাম ক্রমাগতভাবে কমতে শুরু করায় উভয় পক্ষের লোকসান ঠেকাতে কিছু আলু বিক্রি করা হয়েছে। তবে বাজার দরে আলুর মালিকদের টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি কৃষি বিপণন বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত হিমাগার মালিকদের সতর্ক করা হয়েছে।

ভূক্তভোগী কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, জেলার পাঁচবিবি উপজেলার চানপাড়া এলাকার সাথী হিমাগার এবং ক্ষেতলাল উপজেলার ভাসিলা এলাকার মোল্লা কোল্ড ষ্টোরেজ ও আয়মাপুর হাফিজার রহমান বীজ হিমাগারে সংরক্ষণ করা প্রায় ৮০ হাজার বস্তা আলু গোপনে হিমাগার মালিকরা বিক্রি করেছেন। যার মধ্যে সাথী হিমাগারে ৫০ হাজার, মোল্লা হিমাগারে ২৮ হাজার এবং হাফিজার বীজ হিমাগারে ৫ হাজার বস্তার কথা জানা গেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে আলু নিতে শত শত কৃষক ভিড় জমায় হিমাগারগুলোতে।

পাঁচবিবি উপজেলার গোরনা গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিন বলেন,‘নিজের চাষ করা আলু বাছাই করে ‘বার-তের’ ও মিউজিকা জাতের ২০১ বস্তা বীজ আলু সাথী হিমাগারে রেখেছিলাম। কিন্তু হিমাগার থেকে সেই আলু বিক্রি করা হয়েছে। হিমাগার ভাড়া ৪০০ টাকা বাদ দিয়ে আমাকে প্রতি বস্তার দাম দেওয়া হয়েছে ১৫৪ টাকা। স্থানীয় দাহুরিয়া গ্রামের কৃষক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আলু চাষের জন্য ৬৪ বস্তা বীজ রেখেছিলাম।

কিন্তু হিমাগার মালিকরা আমাকে না জানিয়ে বিক্রি করেছে। এখন বাজার থেকে বীজ কেনার মত টাকা নেই আমার কাছে। আলু চাষ করবো কিভাবে। ক্ষেতলাল উপজেলার ঘুগইল গ্রামের কৃষক আসলাম হোসেন অভিযোগ করেন, ভাসিলার মোল্লা হিমাগারে মিউজিকা জাতের ১৯ বস্তা (৬০ কেজি) আলু বীজ রেখেছিলাম।

আরও পড়ুন

রোপনের জন্য সেই আলু নিতে গিয়ে ডিও কেটে তিন দিন ঘুরানোর পর হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানায় তার আলু বিক্রি করা হয়েছে। পরে হিমাগার ভাড়া কেটে নিয়ে ৪০০ টাকা বস্তা হিসেবে ৭ হাজার ৬০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। অথচ বাজার থেকে ওই পরিমাণ বীজ কিনতে আমার খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। জয়পুরহাট সদর উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক নয়ন হোসেন অভিযোগ করেন, হাফিজার বীজ হিমাগারে সংরক্ষণ করা তার ২০৪ বস্তা আলু তারা বিক্রি করেন। পরে নানা দেন দরবার করে বস্তা প্রতি ৩০০ টাকা ক্ষতিপূরণ তিনি পেয়েছেন।

মোল্লা হিমাগারের ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কৃষকের বীজ আলু নয় ব্যবসায়ীদের কিছু আলু বিক্রি করা হয়েছে। যার মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ’ গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মেহেদি হাসান বলেন, ‘অভিযুক্ত তিনটি হিমাগার থেকে ৫৫ হাজার বস্তা আলু বিক্রির প্রমান মিলেছে।

বাজার অনুযায়ী সেই আলুর দাম পরিশোধ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। নিদের্শনা না মানলে বীজ বিপণন লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উত্তরায় সাবেক এমপির ভাইয়ের বাড়িতে আগুন

বগুড়ার ধুনটে একসঙ্গে তিন সন্তান প্রসব

পল্লবীতে দোকানে ঢুকে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা

জয়পুরহাটে তিন হিমাগার মালিকের বিরুদ্ধে কৃষকের আলু বীজ বিক্রির অভিযোগ

রাজধানীর দুই স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ

নাটোরের লালপুরে নারী প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় চক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার