আবারো চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনায় মুজিব পরদেশী

অভি মঈনুদ্দীন ঃ তিনি মুজিব পরদেশী, আধুনিক ফোক গানের রাজা বলেও অনেকে অভিহিত করলেও নিজেকে তিনি একজন ক্ল্যাসিক্যাল সিঙ্গার হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছনন্দ্যবো করেন। বড় হয়েছেন, বেড়ে উঠেছেন তিনি গ্রামে গঞ্জে। তাই গ্রামের মাটি, গ্রামের মানুষ আর সেখানকার পরিবেশই তাকে টানে বেশি। এ কারণেই তার গানে, গায়কীতে মাটির টান ভেসে আসে, স্থান পায় সাধারণ মানুষের কথা, প্রেম বিরহের সাধারণ কথা। তিনি মুজিব পরদেশী, বাংলাদেশের গানপাগল মানুষ যাকে এক নামেই চিনেন জানেন, এখনো। মাঝখানে বহুবছর তিনি শ্রোতাদের সাথে সম্পর্কের জায়গা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। কিন্তু কয়েক বছর হলো তিনি আবারো গানে নিয়মিত হয়ে উঠেছেন। এখন টিভি শো ও স্টেজ শোতে নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে সবার প্রিয় মুজিব পরদেশীকে। নিজের নতুন একক অ্যালবামের কাজ নিয়েও ব্যস্ত আছেন তিনি। নতুন একক অ্যালবামে মোট দশটি গান থাকবে। দশটি গানের কথা, সুর এবং সঙ্গীতায়োজন তিনি নিজেই করবেন। শিগগিরই গান রেকর্ডিংয়ের কাজ শুরু করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন মুজিব পরদেশী। এদিকে দীর্ঘ প্রায় তিন দশক পর মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ডুব’ সিনেমায় একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তবে এরইমধ্যে তিনি আগামী মাস থেকে তারই জনপ্রিয় একটি গানের লাইন থেকে নেয়া ‘কী স্বপন দেইখা আইলাম ভবে’ সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনার কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। চলতি মাসেই সিনেমাটির মহরত হবার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
মুজিব পরদেশী বলেন,‘ এর আগে আমি বিশটিরও বেশি সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনার কাজ করেছি। অসতী, সতীপুত্র আব্দুল্লাহ, অশান্ত ঢেউ’সহ আরো অনেক সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনা করেছি। সিনেমাতে গানও গেয়েছি আমি। বহুবছর পর কী স্বপন দেইখা আইলাম ভবে সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনা করতে যাচ্ছি। যে কারণে এই মুহুর্তে আমি বেশ উচ্ছ্বসিত। আশা করছি আমি বেশ ভালোভাবে এই সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনার কাজটি করতে পারবো।’
মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বেতকা গ্রামে জন্ম মুজিব পরদেশীর। গানে তিনি বিভিন্ন সময়ে তালিম নিয়েছেন ওস্তাদ গোলাম হায়দার আলী খান, ওস্তাদ কোরাইশী, ওস্তাদ ফজলুল হক ও ওস্তাদ আমানউল্লাহর কাছে। তবে গায়ক হিসেবে পরিচিত হবার আগে তিনি ছিলেন একজন তবলাবাদক। রেডিওতে একজন তবলা বাদক হিসেবেই তার পেশাগত জীবন শুরু হয়। এরপর রেডিও টিভিতে সুরকার হিসেবেও তিনি চাকরি করেন। বরেণ্য সুরকার সঙ্গীত পরিচালক সত্য সাহা, সুবল দাস, ধীর আলী, খন্দকার নূরুল আলমের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুনমুজিব পরদেশীর প্রথম এবং সবচেয়ে আলোচিত অ্যালবাম হচ্ছে ‘বন্দী কারাগারে’। এখন পর্যন্ত বাজারে তার ৪২টি একক অ্যালবাম রয়েছে। সর্বশেষ ফিরোজ আল মামুনের ‘দৌড়’ চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করা মুজিব পরদেশী ‘কলেজ অব মিউজিক’ থেকে বি-মিউজিক’ও সম্পন্ন করেছেন। তিনি প্রথম অভিনয় করেন সিরাজ হায়দার পরিচালিত ‘সুখ’ চলচ্চিত্রে। সর্বশেষ আশির দশকের শেষপ্রান্তে ফিরোজ আল মামুনের নির্দেশনায় ‘মোহন মালার বনবাস’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
মন্তব্য করুন