ভিডিও সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

দেশব্যাপী সুপেয় পানি পৌঁছে দিচ্ছে বেসরকারি উদ্যোগ

দেশব্যাপী সুপেয় পানি পৌঁছে দিচ্ছে বেসরকারি উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন সত্ত্বেও এখনও বাংলাদেশের ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ নিরাপদ পানির মতো মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছে। জাতিসংঘের দুই সংস্থা, ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জয়েন্ট মনিটরিং প্রোগ্রাম ২০২৫-এর প্রতিবেদন বলছে, গত এক দশকে পানি ব্যবস্থাপনায় অগ্রগতি মাত্র ৩ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের সকল স্তরের মানুষের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে মানবিক মনোভাবকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন সময় সরকারি, বেসরকারি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।

নিরাপদ পানি না থাকা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বড় ঝুঁকি। আর্সেনিক দূষণ, পানিবাহিত রোগ, দুর্যোগের প্রভাব এবং অবকাঠামোর ঘাটতির কারণে দেশের একটি বড় অংশ নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত। এই সমস্যা মোকাবিলায় ২০০৮ সালে ভেওলিয়া এবং গ্রামীণ হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস যৌথভাবে প্রতিষ্ঠা করে গ্রামীণ ভেওলিয়া ওয়াটার লিমিটেড। তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রায় ৭ হাজার মানুষকে নিরাপদ পানি পৌঁছে দিতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন ও ৫৫টি ট্যাপ পয়েন্ট স্থাপন করেছে। যেখানে ১০ লিটার বিশুদ্ধ পানি মাত্র আড়াই টাকা দরে বিক্রি করা হয়।

এদিকে দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলে নিরাপদ পানির সংকট একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। কেননা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও সমুদ্র জলের ওঠা–নামার স্থানীয় পানি সরবরাহকে ব্যাহত করে। এই সংকট মোকাবিলায় কক্সবাজারের দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় পেপসিকো ফাউন্ডেশন ও ব্র্যাক স্থানীয় উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে পানি শোধনাগার স্থাপন করেছে। এর ফলে ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং ১ হাজারেরও বেশি পরিবার নিরাপদ পানি পেয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পেপসিকো ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষকে নিরাপদ পানি দিয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ কোটি মানুষের কাছে নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে কাজ করছে। তৃণমূল পর্যায়ে কৃষক ও গ্রামীণ পরিবারের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে বিএটি বাংলাদেশ। এই লক্ষ্যে প্রায় ২৫টি জেলায় ১২৬টি পানি শোধনাগার স্থাপন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে কুষ্টিয়াতেই রয়েছে পানির ৪৮টি প্ল্যান্ট। এতে করে সদর, মিরপুর, দৌলতপুর, কুমারখালী ও ভেড়ামারার হাজারো কৃষক ও তাদের পরিবার নিরাপদ পানি পাচ্ছে। যা পানিবাহিত রোগ এবং আর্সেনিকজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। তাছাড়া চলতি বছরই উপকূলীয় অঞ্চলে পানির সমস্যা নিরসনে ব্র্যাক ব্যাংক ও ওয়াটারএইড যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সাতক্ষীরার লবণাক্ত অঞ্চল শ্যামনগরের গাবুরা এবং পদ্মপুকুর ইউনিয়নে পানি পরিশোধনাগার, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ উপকৃত হওয়ার কথা রয়েছে। নিরাপদ পানি সরবরাহে বিভিন্ন বেসরকারি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এসব উদ্যোগকে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন

এই বিষয়ে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইউনেস্কোর ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট আফসানা সাদিক অতুলি বলেন, ‘দেশজুড়ে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নানাবিধ উদ্যোগ কেবল নিরাপদ পানি সরবরাহ করছে না, বরং স্বাস্থ্য, জীবনমান, সামাজিক সচেতনতা ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলছে। এই উদ্যোগগুলো বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের পথে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি তৈরি করছে।‘

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৭ বছর পর বিদেশের মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছে বাংলাদেশি স্কেটাররা

বগুড়ার তালোড়ায় ডাকাতি স্বর্ণালঙ্কারসহ আরও একজন গ্রেফতার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি ও ফুচকা জব্দ

২ লাখ ছাড়াল স্বর্ণের ভরি ,দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম

পুলিশে ৪ হাজার এএসআই নিয়োগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি

বগুড়ায় টাইফয়েডের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু ১২ অক্টোবর থেকে