নদীর দু’ধারে ভক্ত-পূণ্যার্থীদের ভিড়
নৌপথে কান্তজীউ বিগ্রহ নিয়ে আসা হলো দিনাজপুরের রাজবাড়ীতে

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : প্রায় পৌনে তিনশ’ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য ও রাজ পরিবারের প্রথা অনুযায়ী দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কান্তনগর মন্দির থেকে শ্রী শ্রী কান্তজিউ যুগল বিগ্রহ আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) নৌপথে নিয়ে আসা হলো দিনাজপুর শহরের রাজবাটী মন্দিরে।
সনাতন ধর্মালম্বীদের ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আরেক রূপ কান্তজীউ বিগ্রহ নিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে ঢেপা নদীর দু’তীরে প্রতিবছর ভক্ত-পূণ্যার্থীর ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়। প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিতে মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রাজবংশের প্রথা অনুযায়ী জন্মাষ্টমীর একদিন আগে কান্তজীউ বিগ্রহ ধর্মীয় উৎসব-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে দিনাজপুরে নিয়ে আসা হয়। সেই রীতি অনুযায়ী আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৭ টায় ঐতিহ্যবাহী কান্তনগর মন্দিরে পূজা অর্চনা শেষে শ্রী শ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ মন্দির থেকে পদব্রজে ঢেপা নদীর কান্তনগর ঘাটে আনা হয়। সেখান থেকে বিশাল নৌবহর নিয়ে যাত্রা শুরু হয় দিনাজপুর শহরের সাধুঘাটের উদ্দেশ্যে।
প্রায় ২৫ কিলোমিটার নদীপথে কান্তনগর ঘাট থেকে ৩৭টি ঘাটে কান্তজীউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকা ভিড়ানোর পর সন্ধ্যায় এসে পৌঁছে দিনাজপুর শহরের উপকন্ঠে পুণর্ভবা নদীর সাধুরঘাটে। এসময় হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্ত, পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীরা কান্তজীউ বিগ্রহকে দর্শন এবং বাড়ির বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে আসে।
আরও পড়ুনদিনাজপুরের কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোকলেদা খাতুন মীম বলেন, নৌ পথে কান্তজীউ বিগ্রহের ২৭২ তম যাত্রা উপলক্ষে এবার ব্যাপক নিরাপত্তা ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নদী পুনঃখনন করায় গভীরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বিগ্রহ নিয়ে যাওয়ার সময় ভক্ত, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নদীতে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। এরপরও এবার ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নৌবহরে রাখা হয়েছে।
কাহারোল সার্কেল-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো: মনিরুজ্জামান বলেন, কান্তজীউ বিগ্রহের নৌবিহার উপলক্ষে এবার সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। এছাড়াও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গ্রাম পুলিশকেও সংযুক্ত করা হয় যাতে সুষ্ঠুভাবে এই যাত্রাটি সম্পন্ন হয়।
দিনাজপুর রাজ দেবোত্তর এস্টেট’র এজেন্ট রনজিৎ সিংহ বলেন, প্রতি বছর জন্মাষ্টমীর এক বা দুই দিন আগে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার কান্তনগর মন্দির থেকে শ্রী শ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ নদীপথে দিনাজপুর শহরের রাজবাটী মন্দিরে আনা হয়। রাজবাটী মন্দিরে ৩ মাস থাকার পর রাস পুর্ণিমায় আবার কান্তনগর মন্দিরে ফিরে যাবে শ্রী শ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ।
মন্তব্য করুন