ভিডিও শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারতের অস্বীকার

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারতের অস্বীকার

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, চলতি বছরের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছিল। তার দাবি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সংঘাত থামাতে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

আজ শুক্রবার (৮ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ‘ইডব্লিউটিএন’-এর দ্য ওয়ার্ল্ড ওভার অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুবিও বলেন, 'ভারত ও পাকিস্তান যখন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তখন আমরা সরাসরি হস্তক্ষেপ করি এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই শান্তি নিশ্চিত করতে সক্ষম হন।' তিনি আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্প শান্তির পক্ষে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং নিজেকে 'শান্তির প্রেসিডেন্ট' হিসেবে তুলে ধরতে চান।

সাক্ষাৎকারে রুবিও আরও কিছু আন্তর্জাতিক সংঘাতের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার দাবি করেছে— যেমন কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড, আজারবাইজান-আর্মেনিয়া এবং ডিআর কঙ্গো-রুয়ান্ডা। এর মধ্যে ডিআর কঙ্গো-রুয়ান্ডার মধ্যে ৩০ বছরের সংঘাতে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। রুবিও জানান, যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ আরও কিছু আন্তর্জাতিক সংকট সমাধানে আগ্রহী।

এর আগে গত ১০ মে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় রাতভর আলোচনা শেষে ভারত ও পাকিস্তান একটি 'সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে' সম্মত হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা পরই এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, দুই দেশকে বোঝানোর মাধ্যমে তিনি সংঘাত কমাতে ভূমিকা রেখেছেন এবং যুদ্ধ না করলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্য চুক্তি করবে— এমন প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন

তবে নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের এই দাবিকে ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার করেছে। ভারতের দাবি, দুই দেশের সেনাপ্রধানদের আলোচনার মাধ্যমেই যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মধ্যস্থতার কারণে নয়। গত মাসে লোকসভায় ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, 'এটি সম্পূর্ণ ভুল ও ভিত্তিহীন যে কোনো চাপের কারণে ভারত সামরিক অভিযান বন্ধ করেছে।' তার দাবি, সংঘাত শুরুর আগে ও চলাকালে নির্ধারিত রাজনৈতিক ও সামরিক লক্ষ্য অর্জনের পর ভারত নিজস্ব সিদ্ধান্তে অভিযান থামিয়েছে। তিনি আরও জানান, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ডিজিএমও-ই যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেছিল।

দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যানের মতে, ভারত ট্রাম্পকে যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব নিতে না দেওয়ায় প্রেসিডেন্ট ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং রাশিয়া থেকে তেল কেনার অজুহাতে ভারতের ওপর বড় অঙ্কের শুল্ক আরোপ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক কুগেলম্যান ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইকে বলেন, 'চীন ট্রাম্পকে এভাবে রুখে দেয়নি। চীনের কোনো শীর্ষ নেতা তাকে ফোন করে কী ঠিক আর কী ভুল, সেই নির্দেশ দেয়নি। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে সেটিই ঘটেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, দেশের জনগণের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাশিয়া থেকে তেল কেনা হচ্ছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপকে 'অন্যায়, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য' বলে অভিহিত করেছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নওগাঁয় সাড়া ফেলেছে বর্ষাকালীন কালো তরমুজ

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে ফাঁসির ৩ আসামির পালানোর চেষ্টা

কলকাতায় অফিস খুলে কার্যক্রম চালাচ্ছেন হাসিনা: রিজভী

অসহায় মানুষের আশার বাতিঘর গুরুদাসপুরের রাসেল হোসাইন

সিলেটে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন, গ্রেপ্তার ১

ছাত্রদলের কমিটিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর পদ, তদন্ত কমিটি গঠন করলো ঢাবি ছাত্রদল