যেসব পণ্য-সেবার দাম কমতে পারে

বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো কোনো পণ্যে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, আবার শুল্ক কমানো বা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে কোনো কোনো পণ্য ও সেবায়। এতে আসন্ন অর্থবছরে কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে। পাশাপাশি কমতে পারে কিছু পণ্যের দাম।
আজ সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। দেশের ৫৪তম বাজেট ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাজেটে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর শুল্ক কর কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এসব পণ্যের দাম কমবে। এছাড়া আইসক্রিম, ক্যানসারের ওষুধ, উড়োজাহাজের ভাড়া, ই-বাইকের দাম কমতে পারে।
এলএনজির আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে শিল্প উদ্যোক্তাদের খরচ কমবে। হাতে তৈরি মাটির পণ্য ও সুপারি পাতায় তৈরি পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে দেশীয় ক্ষুদ্র শিল্প সুরক্ষা পাবে। মাটির তৈরি পণ্য ও পাতার তৈরি তৈজসপত্রের দাম কমবে।
স্যানিটারি ন্যাপকিন, প্যাকেটজাত তরল দুধ, বলপয়েন্ট কলমের স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে কলম, প্যাকেটজাত দুধ ও স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম কমবে। শিশুদের পছন্দের আইসক্রিমের দামও কমবে। পণ্যটির ওপর আরোপিত সম্পূরক শুল্কের হার ১০ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।
তেলশোধন কার্যক্রমে নিযুক্ত কোনো কোম্পানি কর্তৃক তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে এক দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া ইন্টারনেট সেবা থেকে উৎসে কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে ইন্টারনেট সেবার মূল্য কমতে পারে।
আরও পড়ুননানান সমালোচনার মুখেও কালোটাকা সাদা করার বিধান রাখা হয়েছে বাজেটে। জমি বিক্রেতার হাতে অপ্রদর্শিত অর্থ সৃষ্টি পরিহারের জন্য প্রকৃত বিক্রয়মূল্যে সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশনের লক্ষ্যে জমি হস্তান্তর থেকে কর সংগ্রহের বিদ্যমান মূলধনি মুনাফা করহার কমানো হয়েছে। এলাকাভেদে বিদ্যমান করহার ৮, ৬ ও ৪ শতাংশের স্থলে যথাক্রমে ৬, ৪ ও ৩ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে।
পরিবেশবান্ধব রিসাইক্লিং শিল্প উৎসাহিত করতে এই শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার এক দশমিক ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। জনপ্রিয় সি ফুড জাপানিজ স্ক্যালোপ আমদানিতে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে আমদানি করা এ পণ্যটির দাম কমতে পারে।
আমদানি করা মাখনের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দেওয়ার হয়েছে। কাগজ আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া ক্রিকেট ব্যাটের কাঠ আমদানিতেও শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। এর ফলে ক্রিকেট ব্যাট ও কাগজের দাম কমতে পারে।
শুল্ক সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে দেশের চামড়া ও লবণ শিল্পে। এর ফলে প্রক্রিয়াজাত চামড়া পণ্য ও লবণের দাম কমতে পারে। এছাড়া সিরিশ কাগজের কাচাঁমালে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে এ পণ্যের দাম কমবে।
পশুখাদ্যের উপকরণ কেলসিয়াড প্রোম্যাক্স আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে পশুখাদ্যের দাম কমতে পারে। ২২ ইঞ্চির বদলে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটরের ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে মনিটরের দাম কমতে পারে।
মন্তব্য করুন