ট্রাইকোডার্মার বায়োফানজাইসাইড ব্যবহারে টমেটোর দ্বিগুণ ফলন

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের প্লান্ট প্যাথলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মহিদুল হাসান ও পিএইচডি শিক্ষার্থী মো. শরিফুল ইসলাম উদ্ভাবিত ট্রাইকোডার্মার বায়োফানজাইসাইড ব্যবহারের ফলে টমেটোর দ্বিগুণ ফলন হয়েছে। শুধু তাই নয় টমেটোর গাছও ছিল রোগমুক্ত। ট্রাইকোডার্মার বায়োফানজাইসাইড ব্যবহারের ফলে রোগমুক্ত টমেটোর গাছে গতানুগতিক চাষ পদ্ধতির চেয়ে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি ফলন হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লান্টপ্যাথলজির গবেষণা মাঠে টমেটোগুলো সংগ্রহ করার পর এ চিত্র দেখা গেছে। সেখানে দেখা যায় প্রতি গাছে প্রায় ৯০টি করে টমেটো ধরেছে। টমেটোগুলো যেমন আকারে বড় তেমনি রঙেও আকর্ষণীয়। আর খেতেও দারুণ স্বাদ।
৬টি ট্রিটমেন্টে মধ্যে দেখা গেছে, গবেষকদের উদ্ভাবিত ট্রাইকোডার্মা বায়োফানজাইসাইড প্রয়োগকৃত ট্রিটমেন্টের গাছের শাখা, কান্ড, মূলের দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং উচ্চতা বেশি ছিল। গাছের স্বাস্থ্যও ছিল ভালো। অন্য ৪টি ট্রিটমেন্টের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি ফলন ছিল।
গাছ গণনা করে দেখা যায় প্রতি গাছে ৯০টি করে টমেটে ধরেছে। গবেষণার জন্য গবেষকেরা ৬টি ট্রিটমেন্টের জন্য ভিন্ন ভিন্নভাবে বীজ এবং মাটি শোধন করে নেন। পৃথকভাবে শোধন করা মাটিতে পৃথকভাবে শোধিত বীজ বপন করেন। তারপর ট্রিটমেন্ট অনুযায়ী তারা, সার, বীজ, রোগ এবং ট্রাইকোডার্মা প্রয়োগ করেন।
আরও পড়ুনপ্লান্ট প্যাথলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. মহিদুল হাসান বলেন, আমাদের উদ্ভাবিত ট্রাইকোডার্মার বায়োফানজাইসাইড ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকেরা জৈবিক উপায়ে ফসলের রোগ দমন করতে পারবেন। বিশেষ করে টমেটোর ঢলে পরা রোগ (কৃষকের ভাষায় টমেটোর স্ট্রোক রোগ) দমন করতে পারবেন। পাশাপাশি গাছের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করবে, গাছের শাখা-প্রশাখা বৃদ্ধি, গাছের উচ্চতা বৃদ্ধিতে এবং ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখছে।
পিএইচডি শিক্ষার্থী মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, কৃষকেরা টমেটো চাষের সময় রোগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পরেন। বাজারে প্রচলিত কীটনাশক এবং ট্রাইকোডার্মা প্রয়োগ করেও তারা (কৃষকের ভাষায়) স্ট্রোক রোগ এবং কুয়াশাজনিত রোগ থেকে টমেটোর গাছকে রক্ষা করতে পারেন না। তাই কৃষকদের এমন সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য আমার সুপারভাইজার প্রফেসর ড. মো. মহিদুল হাসান স্যার ও আমি ট্রাইকোডার্মার বায়োফানজাইসাইড উদ্ভাবনের কাজ শুরু করি।
ট্রাইকোডার্মা উদ্ভাবনের জন্য আমরা প্রথমে বিভিন্ন রকমের মাটি সংগ্রহ করে গবেষণাগারে আইসোলেট করি। তারাপর সেখান থেকে আমরা ১৮টি ট্রাইকোডার্মা পেতে সক্ষম হই। আমরা আশা রাখছি আমাদের উদ্ভাবিত ট্রাইকোডার্মা কৃষকদের রোগমুক্ত এবং উচ্চ ফলনশীল টমেটো এবং অন্যান্য ফসল ফলাতে সাহায্য করবে ইনশাআল্লাহ।
মন্তব্য করুন