ভিডিও শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

প্রকাশ : ২০ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৫৭ বিকাল

লাখ লাখ টাকার যন্ত্র নষ্ট হচ্ছে

ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পানি পরীক্ষাগার উদ্বোধনের চার বছর পরও চালু হয়নি

ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পানি পরীক্ষাগার উদ্বোধনের চার বছর পরও চালু হয়নি। ছবি : দৈনিক করতোয়া

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : পানির ৫৭টি পরীক্ষার মাধ্যমে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পানি পরীক্ষাগার। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে উদ্বোধনের চার বছর পরও জেলার একমাত্র পানি পরীক্ষাগারটি চালু করা সম্ভব হয়নি। অথচ দূষিত পানি পান করে টাইফয়েড, কলেরা, ডায়রিয়া, হেপাটাইটিসসহ নানা পানিবাহিত রোগের ভুগছে সাধারণ মানুষ। এদিকে পরীক্ষাগারের ভেতরে বিশুদ্ধ পানি নির্ণয়ে কেনা লাখ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, জেলার মানুষ যেন নিরাপদ ও সুপেয় পানি পান করতে পারে, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২০ সালে ৫৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের পাশে আঞ্চলিক পানি পরীক্ষাগারের দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়।

২০২১ সালের ১৫ জুন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের রংপুর সার্কেলের প্রকৌশলী বাহার উদ্দিন মৃধা এই পরীক্ষাগারের উদ্বোধন করেন। ৮ কক্ষবিশিষ্ট ভবনটিতে একটি ল্যাব রুম, সিনিয়র কেমিস্ট রুম, জুনিয়র কেমিস্ট রুম, জেনারেল অফিস সেকশন ও স্টোর রুম রয়েছে একটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, পরীক্ষাগারের কাজে ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন সময়ে ল্যাবের যন্ত্রপাতি ও আসবাব বরাদ্দ আসে। কিন্তু লোকবলের অভাবে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে কেনা সব যন্ত্র বছরের পর বছর ধরে বাক্সবন্দি আছে। ঠাকুরগাঁও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মালেক বলেন, ‘পরীক্ষাগারটি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না।

বিভিন্ন সময়ে ল্যাবের যন্ত্রপাতি এলে তা গ্রহণ করে অফিসের ভেতরে রাখা হয়। আর চুরি হওয়ার আশঙ্কায় জেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে রাখা হয়েছে এয়ারকন্ডিশন, কম্পিউটার ও ফটোকপি মেশিন।’ পানি পরীক্ষার জন্য বরাদ্দকৃত যন্ত্রপাতি বাক্সবন্দি রয়েছে। দিন দিন সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তিলডাঙ্গী এলাকার স্কুলশিক্ষক নুর ইসলাম বলেন, ‘গ্রামে দূষিত পানি পান করে প্রতিবছর ডায়রিয়া, কলেরাসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। গত ১০ বছরেও এ এলাকায় কোনো প্রতিষ্ঠানকে পানি পরীক্ষা করতে দেখিনি। নিয়ম অনুযায়ী স্যাম্পল কালেকশন করে পানি পরীক্ষা করা উচিত।’

ঠাকুরগাঁও পরিবেশবাদী সংগঠন সৃজনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পানির পরীক্ষাগারের অভাবে এর মান সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাই না। ফলে দূষিত পানি ব্যবহার করে আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পরিবেশকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছি।’

ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ এ কে এম জাহিন মিঠু বলেন, ‘দূষিত পানি পান করলে সাধারণত টাইফয়েড, কলেরা, আমাশয়, হেপাটাইটিস ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিভিন্ন উৎসের পানির গুণগত মান নিয়মিত পরীক্ষা করা প্রয়োজন।’ হাসপাতালের সংক্রামক ওয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসে ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

পানির গুণগত মান পরীক্ষায় ল্যাব চালুর প্রসঙ্গে সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘ল্যাব চালুর বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে আলোচনায় রয়েছে। তবে কবে নাগাদ এটি চালু হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত

ভূমিকম্প আতঙ্ক: কাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

একদিনে ডেঙ্গুতে আরও ৫৯৩ জন আক্রান্ত, মৃত্যু ৩

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে চরাঞ্চলের উন্নয়নে বেশি কাজ করা হবে : অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন

সাড়ে ৩১ ঘণ্টায় ৪ বার ভূমিকম্পে কাঁপলো ঢাকা

হাওর লাইফস্টাইলের যাত্রা শুরু মিমের হাত ধরে | Bidya Sinha Mim | Karatoa Entertainment