ভিডিও রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

সিরাজগঞ্জে যমুনা রেলওয়ে সেতু চালু হলেও দ্রুতগতিতে বড় বাধা ১১৪ কি.মি. সিঙ্গেল লাইন

সিরাজগঞ্জে যমুনা রেলওয়ে সেতু চালু হলেও দ্রুতগতিতে বড় বাধা ১১৪ কি.মি. সিঙ্গেল লাইন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যমুনা নদীর বুকে নির্মিত নতুন যমুনা রেলওয়ে সেতু চালু হয়েছে। এতে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। তবে এ উন্নয়নযাত্রায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ কিলোমিটার সিঙ্গেল রেললাইন, যা দ্রুতগতির ট্রেন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে নির্মিত নতুন রেলসেতুকে ঘিরে উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে আশা জেগেছে। পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি, শিল্প বিনিয়োগ এবং রাজশাহী থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ট্রেন চালানোর পাশাপাশি কক্সবাজার পর্যন্ত এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের প্রত্যাশা দীর্ঘদিনের। তবে পশ্চিমাঞ্চলের ৬৬টি ট্রেনকে এই ১১৪ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইনে ক্রসিং করতে গতি কমাতে হয়, ফলে সময় নষ্ট হচ্ছে এবং বাণিজ্যিক সুবিধা তেমন মিলছে না।

রাজশাহী থেকে যমুনা রেলসেতু পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব প্রায় ১৩৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে নাটোরের আব্দুলপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত মাত্র ২০ কিলোমিটার ডাবল লাইন। কিন্তু ঈশ্বরদী থেকে যমুনা রেলসেতু পর্যন্ত ৭১ কি.মি. এবং রাজশাহী থেকে আব্দুলপুর পর্যন্ত ৪৩ কি.মি. মিলে ১১৪ কি.মি. রেলপথ সিঙ্গেল লাইন হওয়ায় ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান বলেন, রেলসেতুতে দুটি লাইন রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে একটি লাইনে প্রতিদিন ৩৪টি ট্রেন চলাচল করছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলে আরেকটি লাইন খুলে দেওয়া হবে। তখন ঘণ্টায় ১২০ কিমি গতিতে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন পারাপার করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর মাধ্যমে ঢাকা-উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। কিন্তু ২০০৮ সালে মূল সেতুর কিছু অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি সীমিত করা হয়। এরপর প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় মাত্র ২০ কি.মি. গতিতে সেতু পারাপার করত। এ সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ২৯ নভেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

আরও পড়ুন

দেশের দীর্ঘতম এ রেলওয়ে সেতু নির্মাণের প্রাথমিক বাজেট ছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা, যা পরে বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। এর মধ্যে ২৭.৬০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার এবং ৭২.৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপানের জাইকা।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার নতুন সেতু দিয়ে প্রথমবারের মতো রাজশাহী থেকে যাত্রীবাহী সিল্কসিটি ট্রেন পারাপার হয়, যার গতি ছিল ঘণ্টায় ৭০ কিমি। নতুন রেলসেতুর মাধ্যমে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ দ্রুততর ট্রেন যোগাযোগের স্বপ্ন দেখলেও ডাবল লাইন না থাকায় সেই স্বপ্ন এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি বলে জানায় যাত্রীরা।

সেতু প্রকল্পের পরিচালক আরও বলেন, যমুনা রেল সেতুর সর্বচ্চো সুবিধার জন্য সিরাজগঞ্জ থেকে ঈশ্বরর্দী পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার ডাবল রেললাইন নির্মাণের পরিপল্পনা চলমান রয়েছে। রেলসেতু নির্মাণের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাপানের জাইকা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার চুক্তি হয়েছে। জাপান-বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়গে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

এজন্য ইতিমধ্যেই জাপানের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের সুপাররিশ পেতে আরও দেড় থেকে ২ বছরের সময় লাগবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে । একই সাথে ট্রেন ভ্রমণে মানুষের ভোগান্তি কমবে এবং আস্থা বাড়বে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি.- গৌরবময় ৩০ বছরের পথচলা

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে ‘অনলাইন ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট মনিটরিং সিস্টেম’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির ৮৯৭তম সভা অনুষ্ঠিত 

নতুন ঠিকানায় ন্যাশনাল ব্যাংকের গাজীপুর শাখা

কুমিল্লায় আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ‘টাউন হল মিটিং’ আয়োজিত

আমানত সংগ্রহ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে অবদানের জন্য ৭ জন এজেন্টকে  পুরস্কার প্রদান করলো আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক