ভিডিও রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

পোশাক রপ্তানি বেড়েছে

পোশাক রপ্তানি বেড়েছে

সদ্য সমাপ্ত অর্থ বছরে মোট তৈরি পোশাক রপ্তানি ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেড়েছে। অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বেড়েছে ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। তবে রাশিয়া, ইউএই, মালয়েশিয়ার মতো অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি কমেছে। নতুন বাজারে আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন খাতের ব্যবসায়ীরা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত বছর ছিল ৬ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার। এটি মোট রপ্তানির  ১৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

এদিকে বাংলাদেশ ও য্ক্তুরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় দফার বাণিজ্য আলোচনার তৃতীয় ও শেষ দিন উভয় দেশ বেশ কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছে। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো অমিমাংসিত রয়ে গেছে। দুই পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে আন্ত:মন্ত্রণালয় আলোচনা অব্যাহত রাখবে। শুল্ক আলোচনার এখনো সুরাহা না হলেও এরই মধ্যে বিশ্বখ্যাত ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের কয়েকটি অর্ডার স্থগিত বা বিলম্বিত করা হয়েছে। সংবাদপত্রের খবরে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

ওয়ালমার্টের জন্য প্রায় ১০ লাখ পিস সাঁতারের প্যান্টের অর্ডার স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পোশাক তৈরি কারখানার কর্তৃপক্ষ। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার অর্ডারটি স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া আরো কিছু প্রতিষ্ঠান বাড়তি শুল্কের ভাগ নিতে চাপ দিচ্ছে।

একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বৃহত্তম দেশ। দেশটিতে সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার বা ১৮ শতাংশের বেশি পোশাক রপ্তানি হয়। বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা বলছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে আগের প্রায় ১৬ শতাংশ ও নতুন ৩৫ শতাংশ শুল্কসহ বেশির ভাগ বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৫১ শতাংশ।

ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি বাজার, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। এ কারণে নতুন শুল্ক নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। যদিও সরকার মনে করছেন আলোচনার মধ্য দিয়ে এ সংকট কাটিয়ে ওঠা যাবে।

আরও পড়ুন

বিশ্ব বাজারে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা ও ঐতিহ্যবাহী বাজারে স্থবির প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সম্ভাবনা বলে মনে করছেন শিল্প মালিকরা। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে জাপান, অষ্ট্রেলিয়া এবং ভারত শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এই শ্রেণিভুক্ত বাজারগুলোর মধ্যে তুরস্কে রপ্তানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ৬২ শতাংশ, ভারতে ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও জাপানে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। তবে রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানি কমেছে, যা উদ্বেগের।

রাশিয়ায় রপ্তানি ১০ দশমিক ২৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে, ইউএইতে ১০ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে ২৩২ মিলিয়ন ডলার এবং মালয়েশিয়ায় ১১ দশমিক ২১ শতাংশ কমে ১৮৯ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। তবে এসব অঞ্চলে আবারও প্রবেশের সুযোগ রয়েছে যদি বাংলাদেশ সুনির্দিষ্ট কৌশল গ্রহণ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু কম দামে পোশাক সরবরাহ করে এ বাজারে টিকে থাকা যাবে না।

বরং উচ্চ মানসম্পন্ন ও নতুন ডিজাইনের পোশাক, টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা এবং সাশ্রয়ী অথচ পরিবেশ বান্ধব প্রক্রিয়া-এসবই হতে হবে ভবিষ্যতের মূল প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র। বাংলাদেশের একজন পোশাক রপ্তানিকারক বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে নতুন বাজারে প্রবেশ এবং তাদের চাহিদার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ওপর অপ্রচলিত বাজারে যে প্রবৃদ্ধির ধারা শুরু হয়েছে, সেটি আরও বেগবান করতে হলে, সরকারের সক্রিয় ভূমিকা ও উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী মানসিকতা এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।

অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ রপ্তানি খাতের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। আগামী দিনেও তা অব্যাহত থাকবে। জাতীয় রপ্তানির মূল চালিকা শক্তি তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত থেকে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে আয় হয়েছে ৩৯ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থ বছরের ৩৬ দশমিক ১৫ বিলিয়নের চেয়ে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশি পোশাককে গুণগত মান ও ন্যায্য মূল্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চলতি মাসেই আলোচনা শেষ করতে চায় ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ

গ্রিসজুড়ে ভয়াবহ দাবানল, সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের

শ্রীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিক বিক্ষোভ

নির্বাচন কমিশনে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিল বিএনপি

জাতীয় দলে হস্তক্ষেপ না করা নিয়ে যা জানালেন বুলবুল

তারেক-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি আজ