এক বছরের ব্যবধানে প্রণোদনা কমে অর্ধেকেরও নিচে
দুর্দিনে বগুড়ার আউশ চাষ

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায় আউশ ধান চাষ এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। মূলত-পরিমাণ মতো বৃষ্টি, সেচের অভাব, পোকামাকড়ের আক্রমণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন এর প্রধান কারণ। আউশ ধান মূলত বৃষ্টিনির্ভর একটি ফসল, যা মে-জুন মাসে বপণ করা হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে এটি ঘরে তোলা যায়।
তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রয়োজনীয় বৃষ্টির অভাবে সাম্প্রতিক সময়ে আউশ চাষ ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বগুড়ায় এক বছরের ব্যবধানে আউশ চাষের প্রণোদনা কমে অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে বগুড়া জেলায় আউশ চাষের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হয় ১ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৬শ’ টাকা। এর পরের বছর তা আরও বাড়িয়ে ১ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার টাকা করা হয়। আর গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে এই অর্থ কমে দাঁড়ায় ৪৩ লাখ টাকায়। যদিও এবছর এই টাকার পরিমাণ কিছুটা বেড়ে ৫৭ লাখ ১৯ হাজার টাকা করা হয়েছে।
এই দপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, বগুড়ায় ২০২৩ সালে ১৯ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, যা ২০২১ সালে ছিল ২৯ হাজার ২৩৫ হেক্টর। গত বছর ১২ হাজার ৯৭৯ হেক্টর জমিতে এই ধানের চাষাবাদ করে উৎপাদন হয় ৩৯ হাজার ১৩৪ মেট্রিকটন। আর চলতি মৌসুমে সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে ৪৫ হাজার ৯০৯ মেট্রিকটন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনএই কার্যালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান, সম্পূর্ণ বৃষ্টি নির্ভর এই ধান চাষ মৌসুমের শুরুতে আগাম ও প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না থাকায় আউশ চাষের জমি কমছে। অনুকূল আবহাওয়া না মেলায় জেলার চাষিরা বিগত কয়েক বছর ধরেই তাদের জমিতে কাঙ্খিত আউশ ধান রোপণ করতে পারছেন না। তবে, আউশ ধানের স্বল্প জীবনকাল, কম সেচের প্রয়োজন এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্যবহারের মাধ্যমে সরকার আউশ চাষের উৎপাদন বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আউশ ধান চাষের দুর্দিন কাটিয়ে উঠতে হলে-জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সঙ্গতি রেখে উন্নত জাতের ধান চাষ করা, সেচ ব্যবস্থা আরও উন্নত করা এবং রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে এই ধান রক্ষা করার জন্য সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গ্রহণ করাসহ কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন