ভিডিও সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অপরাধ কর্মকান্ড বাড়ছে

অপরাধ কর্মকান্ড বাড়ছে। প্রতীকী ছবি

রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাই পার্টি, চাঁদাবাজ চক্রের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। নানা পদ্ধতিতে তারা সাধারণ যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, সদর ঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এমনকি বিমানবন্দরকে বিচরণ ক্ষেত্র বানিয়ে ফেলেছে এ্ই অসাধু চক্র। ভদ্র চেহারার যাত্রী বেশে এরা কখনো কখনো যাত্রীদের সঙ্গে সম্পর্ক পাতায়। যাত্রীদের কাউকে কোনো এক বিশেষ মুহূর্তে তার অজ্ঞাতসারে ক্লোরোফরম জাতীয় কিছু শোঁকায়। তারপর হাতিয়ে নেয় তার সর্বস্ব। বন্ধু সেজে অজান্তেই তারা আবির্ভূত হয় প্রতারক হিসেবে। এর বেশির ভাগই ভৈরব, বিমান বন্দর, টঙ্গী, তেজগাঁও, আখাউড়া স্টেশনে আস্তানা গাড়ে।

সর্বোচ্চ চারজন নিয়ে অজ্ঞান পার্টির একেকটি চক্র গড়ে ওঠে। তাদের একজনের কাজ যাত্রী নির্বাচন। আরেকজন অচেতন করে লুট করার কাজটি করে। দুজন থাকে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে। ওই দুই সদস্যের দায়িত্ব অচেতন করার সময় ধরা পড়ে গেলে যাত্রী সেজে সহকর্মীকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করা। রাজধানীতে ঢাকা মেডিকেল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রতিদিন অজ্ঞান যাত্রীদের ভর্তি করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, অজ্ঞান করার জন্য বারবিচুরেট জাতীয় বিষ ব্যবহার করা হয়। খাদ্যের সঙ্গে বেশি মাত্রায় এ বিষ পাকস্থলীতে প্রবেশ করলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ক্লোরোফর্ম মেশানো খাবার খেলে লিভার ও কিডনি আক্রান্ত হতে পারে। অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের মাঝে মধ্যে গ্রেফতার করা হলেও আইনের ফাঁক দিয়ে তারা বেরিয়ে যায়।

রাস্তায় জ্যামে পড়ে থাকা প্রাইভেটকার ও সিএনজির মধ্যে কৌশলে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে নারী যাত্রীদের গলার হার ও কানের দুল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা গেছে, এ ধরনের ঘটনার শিকারদের অধিকাংশই থানা- পুলিশ করতে যান না বলে আইন-শৃৃঙ্খলা বাহিনীও এহেন অপরাধীদের আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে অনেক সময় আগ্রহ দেখায় না। ঈদ ও পূজার আগেও এ ধরনের অপরাধ বিশেষত অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঘটনার শিকাররা আদালতে গিয়ে নিয়মিত সাক্ষ্য না দেওয়ার কারণে এবং কতক ক্ষেত্রে পুলিশি রিপোর্টের দুর্বলতার কারণে অপরাধীরা জামিন নিয়ে অনায়াসে বেরিয়ে এসে ফের অজ্ঞান পার্টিতে শামিল হয়ে যায়। এভাবেই এই অপরাধী চক্রের সংখ্যা বেড়ে চলে। ফলে পথ চলতি মানুষ থেকে বাস-ট্রেনসহ বিভিন্ন যানবাহনে চলাচলকারী যে কোনো যাত্রী এদের হাতে সর্বস্ব খোয়াতে পারেন।

আরও পড়ুন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০ জন মানুষ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সেখানে চিকিৎসার জন্য যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এদের দৌরাত্ম্য থামাতে পুলিশের একটি বিশেষ দল মাঠে কাজ করছে। অনেককে ধরে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তবে তাদের কোনোভাবেই নির্মূল করা যায় না। এ জন্য পথচারী বা যাত্রী সবাইকে সতর্ক হতে হবে। প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারকদের কবলে পড়ে নগদ টাকা-পয়সা সহ মূল্যবান কাগজপত্র হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

এর নেপথ্যে রয়েছে তিন কারণ-অসচেতনতা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অপেক্ষাকৃত কম তৎপরতা এবং এই প্রতারণায় সহজ সাজা ও জামিন। মনে রাখতে হবে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এ ব্যাপারে উদাসীন থাকে তবে এর চেয়ে দু:খ ও হতাশাজনক সংবাদ আর কী হতে পারে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদিচ্ছা, আন্তরিকতা ও কার্যকর পদক্ষেপই পারে এ পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হোটেল ওয়েস্টিন থেকে মার্কিন নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার

চীন থেকে দেশে ফিরেই নুরের খোঁজ নিতে ঢামেকে নাহিদ-সারজিস

নাটোরের সিংড়ায় চিঠি লিখে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে অচেনা প্রাণির আক্রমণে ১১ জন আহত

ঠাকুরগাঁওয়ে মায়ের অভিযোগে সন্তানের লাশ কবর থেকে উত্তোলন

দেশকে স্থিতিশীল ও স্বচ্ছ নির্বাচনের পথে এগিয়ে নিতে নারীর সক্রিয়তা অপরিহার্য- মাহমুদা হাবিবা