ভিডিও সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫

পাবনায় ট্রিপল মার্ডার মামলায় পালিত ছেলে তানভীরের মৃত্যুদন্ডাদেশ

পাবনায় ট্রিপল মার্ডার মামলায় পালিত ছেলে তানভীরের মৃত্যুদন্ডাদেশ

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনায় অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার (৬০), তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন (৫০) ও দত্তক নেয়া মেয়ে সানজিদা (১২) হত্যা মামলায় পালিত ছেলে মসজিদের ইমাম তানভীর হোসেনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ পাঁচ বছর মামলা চলার পর আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে পাবনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক তানবির আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আব্দুল জব্বার ছিলেন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। নিঃসন্তান এই দম্পতি একদিন বয়সী শিশু সানজিদাকে দত্তক নিয়ে পাবনা পৌর শহরের দিলালপুর মহল্লায় বসবাস করতেন। এছাড়া তারা বাসার পাশে পাবনা ফায়ার সার্ভিস মসজিদের ইমাম তানভীর হোসেনকে আপন ছেলে হিসেবে লালন পালন করছিলেন।

তারা তাকে পরিবারের সদস্যের মতোই যত্ন নিতেন। তানভীরও তাদের বাবা-মা বলে ডাকতেন। কিন্তু ধীরে ধীরে জব্বারের সঞ্চয়, নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারের প্রতি লোভ জন্ম নেয় তানভীরের। এরই এক পর্যায়ে মসজিদ থেকে ছুটি নিয়ে ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ২০২০ সালের ৩১ মে রাতে নিজ গ্রাম নওগাঁর হরিপুর থেকে ফিরে এসে জব্বারের দিলালপুর মহল্লার ভাড়া বাসায় ওঠেন তানভীর।

রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র ও কাঠের বাটাম দিয়ে প্রথমে ব্যাংক কর্মকর্তা জব্বার, পরে তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন এবং সর্বশেষ তাদের মেয়ে সানজিদাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এরপর বাথরুমে গিয়ে গোসল করে রক্তমাখা কাপড় ধুয়ে বাড়ির আলমারি ও আলমারির লকার থেকে নগদ দুই লাখ টাকা, এক লাখ ভারতীয় রুপি এবং স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে ফজরের আজানের সময় নির্বিঘ্নে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় সে।

আরও পড়ুন

ঘটনার পাঁচদিন পরে পাঁচ জুন মৃতদেহ পঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের দেয়া খবরে পুলিশ বাসা থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পরপরই বিষয়টি উদঘাটনে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম। এ ঘটনায় নিহত আব্দুল জব্বারের ভাই আব্দুল কাদের বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার মাত্র একদিন পর ৬ জুন রাতে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে তানভীরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই সে হত্যার কথা স্বীকার করে।

সেই সময় তার দেখানো স্থান থেকে লুণ্ঠিত কিছু মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ তদন্ত শেষে মামলার একমাত্র আসামি তানভীর হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। আদালত ২২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে অভিযুক্ত তানভীর হোসেনকে হত্যার জন্য মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড।

চুরির জন্য পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করেন। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পিপি আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু। আর আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন কেএম মিজানুর রহমান ও কাজী মকবুল আহমেদ বাবু।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ৬ লাখ টাকাসহ বিকাশ কর্মী নিখোঁজ

ডাকসু নির্বাচনে পোস্টার-ব্যানার নিয়ে কঠোর নির্দেশনা

কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি গ্রেফতার

যন্ত্র যখন যন্ত্রণাদায়ক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সাত কেজি বিস্ফোরক সদৃশ বস্তু উদ্ধার

লালমনিরহাটে পোস্ট পেইড মিটারের দাবিতে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও