ভিডিও শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫

রাজশাহীতে একই বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের লাশ, চিরকুটে অভাবের কথা

রাজশাহীতে একই বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের লাশ, চিরকুটে অভাবের কথা

রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীতে একই ঘরে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের লাশ, চিরকুটে অভাবের কথা রাজশাহীতে একই ঘর থেকে স্বামী-স্ত্রী ও তাদের দুই সন্তানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোনো একসময় তাদের মৃত্যু হয়। আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়। মৃতরা হলো- মিনারুল ইসলাম (৩৫), তার স্ত্রী মনিরা খাতুন (২৮), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলা (৪)। তাদের বাড়ি পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামনশিকড় গ্রামে।

বামনশিকড় পবা উপজেলায় হলেও এলাকাটি পড়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মতিহার থানায়। মতিহার থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এর আগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আলামত সংগ্রহ করে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে স্ত্রী-সন্তানদের শ্বাসরোধে হত্যার পর মিনারুল আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তকালে তাদের বাড়ি থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ ধারণা করছে, চিরকুটটি মিনারুলের লেখা। চিরকুটে ঋণের দায়ে ও খাওয়ার অভাবে স্ত্রী ও সন্তাদের হত্যার পর আত্মহত্যার কথা লেখা আছে।

চিরকুটের এক পাতায় লেখা আছে, ‘আমি মিনারুল নিচের যে সব লেখা লেখবো। সব আমার নিজের কথা লিখে যাচ্ছি। কারণ, আমরা চারজন আজ রাতে মারা যাবো। এই মৃত্যুর জন্য কারো কোনো দোষ নেই। আমি মিনারুল প্রথমে আমার স্ত্রীকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিমকে (ছেলে) মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে (মেয়ে) মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।”

চিরকুটে আরও লেখা আছে, “আমাদের চারজনের মরা মুখ যেন বাপের বড় ছেলে ও তার স্ত্রী-সন্তান না দেখে এবং বাপের বড় ছেলে যেন জানাজায় না আসে। আমাদের চার জনকে কাফন দিয়ে ঢাকতে আমার বাবা যেন টাকা না দেয়। এটা আমার কসম।’

আরও পড়ুন

চিরকুটের অপর পাতায় লেখা আছে, ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম, কারণ আমি একা যদি মরে যাই তাহলে, আমার স্ত্রী-সন্তানরা কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমারা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভাল হলো। কারও কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্যে কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না।

আমার বাবা আমার জন্য অনেক মানুষের কাছে ছোট হয়েছে, আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’ সকালে খবর পেয়ে যান রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, ‘লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে সেটা ময়নাতদন্তের পরই নিশ্চিত করে বলা যাবে। আত্মীয়-স্বজনেরা পুলিশকে বলেছেন, চিরকুটের লেখাটা মিনারুলেরই। সেখানে আর্থিক সমস্যার কথা উঠে এসেছে। আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করব।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নৌপথে কান্তজীউ বিগ্রহ নিয়ে আসা হলো দিনাজপুরের রাজবাড়ীতে

দিনাজপুরের খানসামায় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আটক

পাবনার চাটমোহরে প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়েছেন এএসআই শাকিল!

বৈঠকের জন্য কেন সামরিক ঘাঁটি বেছে নিলেন ট্রাম্প-পুতিন

বগুড়ার শেরপুরে ১ হাজার পরিবারের পানিবন্দি মানবেতর জীবন

দেশব্যাপী প্রতিভা খোঁজে ‘নতুন কুঁড়ি’ ফিরিয়ে আনবে বিএনপি