ভিডিও বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫

বেরোবিতে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, একজন বরখাস্ত অন্যজন বহাল

বেরোবিতে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, একজন বরখাস্ত অন্যজন বহাল। ছবি : দৈনিক করতোয়া

‎রংপুর প্রতিনিধি : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের হুমকির প্রেক্ষিতে যৌন হয়রানির অভিযোগে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. রশীদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে একই অভিযোগে অভিযুক্ত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তানজিউল ইসলাম জীবনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ‘বিচার বৈষম্যের’ অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পরিসংখ্যান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৩তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ড. রশীদুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়।

সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ অনুসারে বরখাস্তের আদেশটি গত রোববার (৩ আগস্ট) রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর রশিদের স্বাক্ষরে জারি করা হয়। ‎সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমে ওই শিক্ষককে ক্লাস ও পরীক্ষা থেকে এক বছরের জন্য বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেন এমন তথ্য জানাজানি হলে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে উপাচার্যের কাছে তার বহিষ্কার দাবি করেন।

উপাচার্য শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ কয়েকবার সময় নিয়েও ব্যবস্থা না নেওয়ায় গত পরশু দিন থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের হুমকি দিতে থাকেন। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের খবর জানানো হয়।

‎তবে ঠিক একই সময়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ড. তানজিউল ইসলামের বিরুদ্ধেও মার্ক টেম্পারিং ও যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে, অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়, তদন্ত কমিটি একইসঙ্গে গঠিত হয়। ৪মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা না হওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।

সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি শিক্ষক জীবনের বিরুদ্ধে তেমন কিছু খুঁজে পায়নি এই মর্মে প্রতিবেদন জমা দেয়। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন- স্পষ্ট রেকড়িং ও এত তথ্য প্রমাণ থাকার পরও তদন্ত কমিটির কোনো কিছু খুঁজে না পাওয়া সন্দেহজনক।

আরও পড়ুন

সূত্র বলছে, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষক জীবনকে কার অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে এবং আগামী যে কোনো সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত পাশ করিয়ে নেওয়া হবে। ‎এই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ, এই শিক্ষক বিএনপিপন্থি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ভিসির সঙ্গে সখ্যতাকে কাজে লাগিয়ে তদন্তকে প্রভাবিত করেছেন।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গুঞ্জন উঠেছে, প্রভাবশালী পরিচয়, প্রশাসনের ঘনিষ্ঠতা কিংবা গোপন সমঝোতার জেরে তানজিউল ইসলাম ‘রেহাই’ পেয়ে গেছেন কিনা। শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় নিষ্পত্তিমূলক তদন্ত ও সমান বিচার দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে ড. তানজিউল ইসলাম জীবনের বিপক্ষে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য একাউন্টিং বিভাগের শিক্ষক আমির বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন হওয়ার ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন কবে এটি প্রকাশ করবে এটা উপাচার্য জানেন। আমরা তা জানি না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো শওকত আলী বলেন, আমরা একটা রিপোর্ট প্রকাশ করেছি। সিন্ডিকেট মিটিং এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করেছি। একই অভিযোগ, একই তদন্ত কমিটি, একটির রেজাল্ট সাময়িক বহিষ্কার অন্যজন এখনো বহাল এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা সামনের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে এটা তুলব। তারপর সিদ্ধান্ত নেব। কারণ এসব বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুরে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কারাদন্ডাদেশ

বগুড়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ প্রধান আসামি গ্রেফতার

বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালন

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পুলিশের অভিযানে ট্যাপেন্টাডলসহ আটক ২

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বগুড়ায় জামায়াতের গণমিছিল