বগুড়ায় ১২৭৬টি সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপনে ব্যর্থ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ার ১২ উপজেলায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শুরু বা শেষ করতে পারেনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়। নির্দিষ্ট সময় শেষ হলেও কাজ শুরু করতে না পারায় এই প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেলে জেলার ১২৭৬ টি পরিবার বঞ্চিত হবে সাবমার্সিবল পাম্প প্রাপ্তি থেকে।
বগুড়ায় ক্রমশ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে তা ছাড়া পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক ও আয়রণ থাকায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষ আর্সেনিক ও আয়রনযুক্ত পানি ব্যবহার করে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এমন অবস্থায় সরকার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এর আওতায় বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ১২৭৬টি সাব মার্সিবল পাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১১ কোটি ৯৮ লাখ টাকার বেশি ব্যয়ে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এই প্রকল্পের মধ্যে বগুড়া সদর, গাবতলী এবং ধুনট উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে।
চলতি বছরের ৩০ জুন ওই প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে পারেনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, বগুড়া। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে ২০২৪ সালে অক্টোবরে এই প্রকল্পের আওতায় জেলার ১২ জেলায় ১২৭৬টি সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়।
টেন্ডার আহবান করার পর নির্বাচিত ঠিকাদারদের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদারেরা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু না করলেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বগুড়ার কার্যালয় থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে জুন ২৫ এর মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও শুরু করায় সম্ভব হয়নি। তবে একটি সূত্র বলছে ঠিকাদারের সাথে যোগ সাজসে প্রকল্পের অর্থ লোপাটের অসৎ উদ্দেশ্যে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে প্রকল্পের কাজ না হওয়ায় বঞ্চিত হচ্ছে ভুক্তভোগী চিহ্নিত ব্যক্তি/পরিবার। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে প্রতিটি ইউনিয়নে ১২টি করে সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর কথা ছিলো। কিন্তু বসানো সম্ভব হয়নি, ঠিকাদারেরা কোন কাজ করেনি।
আরও পড়ুনযদিও সুবিধাভোগীদের চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে আমাদের সোনাতলা উপজেলা প্রতিনিধি জানান, সোনাতলা উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জাহানারা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার উপজেলায় ৭ ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে ১২টি করে মোট ৮৪টি সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপন করা হবে। ইতিমধ্যেই সেগুলোর চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। তবে সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপনের কাজ এখনও শুরু হয়নি। কবে নাগাদ শুরু হবে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, এসকল তদারকি করছেন জেলা কর্মকর্তা।
এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বগুড়ার কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। এ বিষয়ে বগুড়া জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানান, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
ঠিকাদারদের গড়িমসির কারণে কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। ঠিকাদারদের কাজ করার নির্দেশ দেওয়ার পরও কাজ করেনি। তবে কি কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছেন এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি কার্যকর পদক্ষেপের বিষয়টি জানাতে পারেন নি।
মন্তব্য করুন