ক্যানাল বন্ধে পানিবন্দি ১০ গ্রাম
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় দুই হাজার একর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে : বাঁধ ভাঙায় মামলা

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় টানা বর্ষণে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় দুই হাজার একর ফসলি জমি ও শতাধিক মাছের পুকুর তলিয়ে গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের ক্যানালটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ ছিল। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষ ক্যানালটি মাছ চাষের জন্য স্থানীয় কামাল বাবু নামে এক ব্যক্তিকে লিজ দেওয়ার পর তিনি বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে প্রতাপপুরসহ আশেপাশের প্রায় ১০টি গ্রামে পানি আটকে যায়।
স্থানীয়রা জানান, প্লাবিত জমি ও পুকুর নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীর জীবিকাও কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই কৃষি ও মাছচাষের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন যা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরিবারে খাবার সংকটও দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী ক্যানালটি অবিলম্বে উন্মুক্ত করে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন। এদিকে ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকদিন আগে গ্রামবাসী ক্যানালের একটি বাঁধ ভেঙে দেয়।
এতে কামাল বাবুর ক্যানালের চাষকৃত মাছ বেরিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে কামাল বাবু থানায় কয়েকজন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল বাবু বলেন, তিনি নিয়ম মেনেই মিল থেকে ক্যানাল লিজ নিয়েছেন মাছ চাষের জন্য। বাঁধ দেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু মাছ ধরে রাখার জন্য কিছু ঘেরা ছিল। বেশি বৃষ্টির কারণে পানি জমেছে। এখন বাঁধ ভেঙে তার মাছ ছেড়েছে লোকজন তাই বাধ্য হয়ে মামলা করেছেন তিনি।
আরও পড়ুননর্থবেঙ্গল সুগার মিলের অন্তর্গত কৃষ্ণা কৃষি খামারের খামার প্রধান খাইরুল ইসলাম বলেন, নিয়ম মেনেই লিজ দেওয়া হয়েছে। তবে লিজের শর্তে বলা আছে, পানির স্বাভাবিক গতি বন্ধ করা যাবে না। কামাল বাবু সেটা মেনেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রামের লোকজন বিষয়টি সরাসরি তাকে জানালে তারা ব্যবস্থা নিতে পারতো। এখন তারা বাঁধ ভেঙে দিয়ে তার মাছ বের করে দিয়েছে, এতে উল্টো সমস্যা হয়েছে।
এদিকে আজ সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফ আফজাল রাজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন। তবে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি তিনি।
মন্তব্য করুন