বগুড়ার ধুনটে গ্রামে গ্রামে খাবার পানির সংকট, মানুষের চরম দুর্ভোগ

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : তীব্র খরার মধ্যে ভূ-গর্ভস্থ পানিস্তর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রামে গ্রামে খাবার পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। বিশেষ করে উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলে হস্তচালিত নলকূপে এক ফোটাও পানি উঠছে না।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ৮৪ হাজার ৫০৪টি পরিবারে সরকারি সাড়ে ৫ হাজারসহ ৮৪ হাজার ১৭৪টি নলকূপ রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ হস্তচালিত নলকূপেই উঠছে না পানি। আর দীর্ঘদিন ধরে ৫ শতাংশ হস্তচালিত নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টি না হওয়ায় মার্চ মাস থেকে গ্রামীণ জনপদে ভূ-গর্ভস্থ পানিস্তর আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেমে যায় প্রতি বছর। গত কয়েক বছর ধরে এমনটা দেখা যাচ্ছে। এবছর পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের শ্যামগাঁতী, পিরহাটি, সাগাটিয়া, হিজুলী, কুড়িগাতী, নিশ্চিতপুর, প্রতাব খাদুলীসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে পানি সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানির অভাবে গবাদিপশু পালন ও সংসারের কাজকর্মও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাংসারিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পুকুর ও বিলের পানি। এ কারণে পেটের পীড়া ও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
এলাকাবাসী জানান, মার্চ মাস থেকে টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। এক ঘণ্টা চেষ্টা করেও এক বালতি পানিও তোলা যাচ্ছে না। এখন প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে পানি এনে খেতে হচ্ছে। আগে মানুষ খাওয়ার চিন্তা করতেন। এখন এলাকার মানুষের বড় চিন্তা হয়ে উঠেছে খাওয়ার পানি।
আরও পড়ুনউপজেলার মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, তার ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই সরকারি নলকূপ ছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন সব টিউবয়েলে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। সামান্য কিছু টিউবয়েলে পানি উঠলেও পরিমাণে তা খুবই কম। যাদের বৈদ্যুতিক মোটরের ব্যবস্থা নেই বা সামর্থ নেই তারা অন্যের বাড়ি থেকে পানি এনে চাহিদা মেটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেহেদুল ইসলাম বলেন, কোন কোন এলাকায় পানির স্তর স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৫ থেকে ৪০ ফুট নিচে নেমে যাওয়ায় হস্তচালিত নলকূপে পানি উঠছে না। এ কারণে এলাকাবাসী সাময়িকভাবে খাবার পানির সংকটে পড়েছেন। তবে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেও আশা যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন