ভিডিও বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

প্রচন্ড তাপদাহে চাহিদা বেড়েছে নওগাঁর তালপাতার হাতপাখার 

প্রচন্ড তাপদাহে চাহিদা বেড়েছে নওগাঁর তালপাতার হাতপাখার 

নওগাঁ প্রতিনিধি : সারাদেশে বয়ে যাচ্ছে প্রচন্ড দাবদাহ। আর এই আধুনিক প্রযুক্তির যুগে তালপাতার হাত পাখা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন নওগাঁর মহাদেবপুরের ভালাইন গ্রামের ৭০/৭৫টি পরিবারের শতাধিক মানুষ।

একদিকে সকল জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় লাভ কম হলেও বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতে কঠিন সংগ্রাম করতে হচ্ছে তাদের। তবে তালগাছ কমে যাওয়া, আর্থিক সমস্যা, আগের মত চাহিদা না থাকা এবং পরিশ্রমের তুলনায় লাভ কম হওয়া এই পেশার মূল সমস্যা। স্বল্প সুদে ঋণ এবং সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে আরও এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন পাখা তৈরির কারিগররা।

নওগাঁ শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার পশ্চিমে মহাদেবপুর উপজেলার উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম ভালাইন। ওই গ্রামের দরিদ্র গ্রামীণ নারীরা দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে তালপাতার হাত পাখা তৈরিকে এখন পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। সময়ের পরিক্রমায় গ্রামটি এখন ‘পাখা গ্রাম’ হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। তালপাতা দিয়ে তৈরি হাত পাখা অনেকের সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা। পুরুষরা শুধু তালপাতা নিয়ে এসে শুকানোর পর পরিষ্কার করে দেয়। এরপর সাংসারিক কাজের পাশাপাশি গৃহবধূরা পাখাকে সুই-সুতা দিয়ে সেলাই ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করেন।

হাতপাখার কারিগর সুফিয়া বেগম বলেন, একজন নারী প্রতিদিন ৮০-১শ’ পিস পর্যন্ত পাখা তৈরি করতে পারে। ১শ’টি তালপাখায় সুই-সুতা দিয়ে সেলাই ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজের বিনিময়ে ৭০ টাকা পান তিনি। তবে কাজের তুলনায় মজুরি খুবই কম বলছেন তিনি। হাতপাখার আরেক কারিগর কমলা বানু ও শাপলা খাতুন বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকার এসে তাদের তৈরি হাত পাখা কিনে নিয়ে যায়।

তালপাতার সাথে বাঁশের খিল, সুতা ও রঙ মিশিয়ে হাত পাখা তৈরি করা হয়। তবে লাভের পরিমাণ আগের তুলনায় কম। তাই তারা সরকারের কাছে সহযোগিতা অথবা সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করার জোর দাবি তাদের।

আরও পড়ুন

উত্তরগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান পলাশ বলেন, প্রতিবছর প্রায় ৫ লাখ তালপাখা এ গ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। এ কুটির শিল্পের সাথে যারা জড়িত তাদের সরকারিভাবে সহায়তার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন বিসিক নওগাঁ এর উপ-ব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন বলেন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সাথে যারা যুক্ত তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হয়ে থাকে। পাখা তৈরির কারিগর ও ব্যবসায়ীরা আরও বড় পরিসরে আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহজ কিস্তিতে ঋণ পেতে পারে এমন আশ্বাস দেন তিনি।

পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত তালপাতার হাত পাখা তৈরির সাথে জড়িতদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ সহজ শর্তে ঋণ দিলে অনেক বেকার মানুষের নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মাস্টার্সে সিজিপিএ ৩.৯৮ পেয়ে প্রথম হলেন জবি শিবির নেতা

তিন দফা দাবিতে বুধবার ‘লং মার্চ টু যমুনা’ ঘোষণা জবি শিক্ষার্থীদের

জয়পুরহাটে জামিন নিতে এসে কারাগারে গেলেন দুই আওয়ামী লীগ নেতা

বগুড়ার ধুনটে ১১০ কোটি টাকার ভুট্টা উৎপাদন, কৃষকের লাভ দ্বিগুনেরও বেশি

রাজশাহীতে রেফারি প্রশিক্ষণ শুরু

বগুড়ার ধুনটে যুবদল নেতার ওপর ককটেল হামলা, গ্রেফতার ১