থানায় অভিযোগ
বগুড়ার ধুনটে সিজারের সময় প্রসূতির পেটে গজ রেখে সেলাই

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আদর্শ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড হাসপাতালে মহনা খাতুন (২৪) নামে এক প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশনের সময় পেটের ভেতর সার্জিক্যাল গজ রেখে সেলাই করে দিয়েছেন এক চিকিৎসক। মহনা খাতুন সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার হরিনাথপুর গ্রামের লিটন মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী লিটন মিয়া বাদি হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মহনা খাতুন বর্তমানে বগুড়া শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সংকাটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মহনা খাতুনের প্রসব ব্যাথা উঠায় ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ধুনট হাসপাতাল রোডে অবস্থিত আদর্শ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকেলে তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. সাখাওয়াত হোসেন। এরপর ২১ জুলাই দুপুর ১টায় মহনা খাতুনকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিছুদিন পর মহনা পেটে ব্যাথা অনুভব করেন। কিন্তু অনেক চিকিৎসার পরও সুস্থ হয়নি মহনা খাতুন। এ বিষয়টি নিয়ে আদর্শ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল মোমিনের সাথে যোগাযোগ করেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী লিটন মিয়া। তখন হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল মোমিন বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানোসহ লিটন মিয়াকে বিষয়টি প্রকাশ না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এ অবস্থায় গত ৪ জানুয়ারি বগুড়া শহরের একটি ক্লিনিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় মহনার পেটের ভেতর সার্জিক্যাল গজ রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে শহরের অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন করে মহনার পেট থেকে সার্জিক্যাল গজ বের করা হয় এবং তাকে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে মহনার পেটে অপারেশন করা স্থানে ইনফেকশন হয়। এসময় চিকিৎসকের পরামর্শে ফের বগুড়া শহরের ওই হসপিটালে ভর্তি হলে মহনাকে গত মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় অপারেশন করা হয়। বর্তমানে মহনা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় লিটন মিয়া বাদি হয়ে আদর্শ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক আব্দুল মোমিনের নামে থানায় অভিযোগ করেন।
আদর্শ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল মোমিন বলেন, বিষয়টি জানার পর ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারের সাথে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্ত তারা কোন সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে ডা. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ ঘটনার কথা শুনেছি। কিন্ত প্রসূতির পরিবারের কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। যোগাযোগ করলে হয়তো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিষয়টির সমাধান করা যেত।
অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ধুনট থানার এসআই মোস্তাফিজ আলম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুনধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ কাদির বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন